Home First Lead বন্দর সক্ষমতা বহুগুণ বাড়াতে চলতি বছরের মধ্যে নতুন অপারেটর নিয়োগ

বন্দর সক্ষমতা বহুগুণ বাড়াতে চলতি বছরের মধ্যে নতুন অপারেটর নিয়োগ

বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। ছবি: সংগৃহীত
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), লালদিয়ার চর ও বে-টার্মিনালে অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এর মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্ষমতা এবং বিনিয়োগ আকর্ষণ বাড়ানো হবে।

রোববার (১০ আগস্ট) চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে শিপিং ও লজিস্টিক এজেন্ট ডেস্ক উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা এখনের চেয়ে চার থেকে পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পাবে। এ সময় বন্দরের সক্ষমতা ও কার্যক্রমের আধুনিকায়নে প্রযুক্তি ও নতুন ম্যানেজমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বিডা চেয়ারম্যান আরও জানান, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডেলিং গত এক মাসে গত মাসের তুলনায় প্রায় ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জাহাজ ক্লিয়ারেন্সের সময় প্রায় ৮ ঘণ্টা কমানো সম্ভব হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চিটাগাং ড্রাইডক লিমিটেডের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। বন্দরে চালু করা হয়েছে আরটিজিএস, অটোমেটেড টিকেটিং, অনলাইন এজেন্ট ডেস্কসহ নানা প্রযুক্তিগত সেবা, যা কাজের গতি বাড়াচ্ছে এবং দুর্নীতির সুযোগ কমাচ্ছে।

অপারেটর নিয়োগ প্রসঙ্গে আশিক চৌধুরী বলেন, নতুন অপারেটর নিয়ে আসার উদ্দেশ্য শুধু বর্তমানে ভালো পারফরম্যান্স নয়, বরং বন্দরের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানো। এজন্য বন্দরকে আধুনিক প্রযুক্তি, বিনিয়োগ ও দক্ষ ম্যানেজমেন্ট দিয়ে সেরা অবস্থানে আনা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বছরের শেষের মধ্যে নতুন অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হবে।

আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই তিনটি কনটেইনার টার্মিনালে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের পরিকল্পনা প্রায় শেষ পর্যায়ে। এনসিটি পরিচালনায় থাকবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড, লালদিয়ার চর টার্মিনালে নেদারল্যান্ডসের এপিএম টার্মিনালস, আর বে টার্মিনালে ডিপি ওয়ার্ল্ড ও সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে।

বর্তমানে নিউমুরিং টার্মিনাল সাময়িকভাবে নৌবাহিনী-সংলগ্ন চিটাগাং ড্রাইডক লিমিটেড পরিচালনা করছে। তাদের দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম মাসেই কনটেইনার ওঠানামা ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পণ্য খালাসের সময় কমেছে প্রায় ১৩%। গত বছর এখানে ১৩ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডেল করা হয়েছিল, যা চলতি বছরে ১৭ লাখে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আশিক চৌধুরী বলেন, বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বন্দরের সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেশের ট্রেডের প্রায় ৯০% পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে প্রবাহিত হওয়ায় এটি দেশের অর্থনীতির ‘হটস্পট’। বিশেষ করে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম এককালীন বৈদেশিক বিনিয়োগ।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য একটি অটোমেটেড সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে, যা বন্দরে দুর্নীতি ও জটিলতা কমাবে এবং কার্যক্রমে গতি বৃদ্ধি করবে। ভবিষ্যতে বন্দরে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহারও দেখা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নতুন অপারেটর নিয়োগের মাধ্যমে বন্দরের দক্ষতা ও বিনিয়োগ আকর্ষণ ত্বরান্বিত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।