বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর লুটের পর এবার জাফলং ও ধোপাগুলে লুট হওয়া সাদাপাথর উদ্ধার করতে কঠোর অভিযান চালাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। গত দুই দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে লুট হওয়া পাথর উদ্ধার করে পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।
সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোশনূর রুবাইয়ার নেতৃত্বে শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযানে ধোপাগুলে ও মহালদিক এলাকায় অবৈধভাবে বালু ও মাটির নিচে রাখা প্রায় ২,৫০,০০০ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়। ধোপাগুলে এলাকা থেকে উদ্ধারকৃত এই পাথর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির উদ্দেশ্যে রাখা হয়েছিল। অভিযানকালে ধোপাগুলে এলাকার বিভিন্ন ক্রাশার মিল এবং মহালদিক গ্রামের প্রায় ২৫টি বাড়ি তল্লাশি করে প্রশাসন পাথর উদ্ধার করে। ইউএনও খোশনূর রুবাইয়াৎ জানান, “পাথরগুলো উদ্ধার করা হয়েছে এবং অবৈধভাবে রাখা অন্যত্র কোথায় পাথর আছে, তা খুঁজে বের করা হবে।”
অন্যদিকে, জাফলংয়ে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স দুইদিন অভিযান চালিয়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারীর নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার পিয়াইন নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৩,০০০ ঘনফুট এবং শুক্রবার আরও ৫,৫০০ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়। মোট ৮,৫০০ ঘনফুট পাথর নৌকা ব্যবহার করে জাফলং জিরো পয়েন্টে পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।

অভিযানে অংশগ্রহণ করেন সংগ্রাম বিওপির ক্যাম্প কমান্ডার শহিদুল ইসলাম, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, গোয়াইনঘাট থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোবারক হোসেন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা। রতন কুমার অধিকারী জানান, “জিরো পয়েন্ট থেকে পাথরগুলো পুনঃস্থাপন করা হয়েছে, তবে আরও কোথায় কোথায় পাথর অবৈধভাবে রাখা আছে, তা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। চুরি হওয়া পাথর ফেরত না আসা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
স্থানীয় পর্যটক ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জাফলং ও ধোপাগুলের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা এবং পর্যটন স্বার্থে এই ধরনের অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা আশা প্রকাশ করেন, প্রশাসনের এই কঠোর পদক্ষেপ ভবিষ্যতে অনাকাঙ্ক্ষিত লুটপাট ও পরিবেশ ধ্বংস রোধে কার্যকর হবে।
এদিকে, প্রশাসনের এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে লুট হওয়া পাথরের কারণে পর্যটন এলাকা ও স্থানীয় পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছিল। প্রশাসনের সক্রিয় পদক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আসছে।”
উল্লেখ্য, ভোলাগঞ্জ, জাফলং ও ধোপাগুলে এলাকা সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র। এখানে সাদা পাথর ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। প্রশাসনের এই অভিযান স্থানীয় পর্যটন ও পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।