Home আইন-আদালত বিচারকের বাসায় টাকার বা‌ন্ডিল প্রেরণ, পদ গেল জামায়াতের পি‌পির

বিচারকের বাসায় টাকার বা‌ন্ডিল প্রেরণ, পদ গেল জামায়াতের পি‌পির

অ্যাডভোকেট মো. রুহুল আমিন
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের সরকারি কৌশলী (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে আদালতের বিচারককে ঘুষ পাঠানোর অভিযোগের পর তার জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সদস্যপদও স্থগিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাতে জেলা জামায়াতে ইসলামী পটুয়াখালী শাখার সম্পাদক অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম আল কায়ছারীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পেশাগত অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় পৌরসভা ও জেলা সংগঠনের দায়িত্বশীলরা জরুরি বৈঠকে বসেন। সভায় বিষয়টি বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয় এবং পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক নীলুফার শিরিনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা আইনজীবী সমিতির এক জরুরি সভায় রুহুল আমিনের সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন ১৮৪ জন সদস্য।

বিচারক নীলুফার শিরিন অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, তার আদালতে বিচারাধীন ধর্ষণ মামলার আসামির পক্ষে রুহুল আমিন হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান, যার কোনো উত্তর তিনি দেননি। পরে ২০ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে রুহুল আমিনের একজন প্রতিনিধি তার বাসার গৃহকর্মীর নিকট একটি লাল ব্যাগ দেন। ব্যাগের মধ্যে দুটি খাকি খাম ছিল। এক খামে উক্ত মামলার যাবতীয় কাগজপত্র এবং অন্য খামে ৫০০ টাকার একটি বান্ডিল ছিল। বিচারক অভিযোগের ভিত্তিতে রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

পটুয়াখালী জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে আলোচনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে স্থানীয় সংগঠন পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।

অন্যদিকে, পিপি রুহুল আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “এটি আমার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। উক্ত মামলা পূর্ববর্তী সরকারের সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল। আমি শুধু বিচারককে বিষয়টি অবহিত করেছি।”

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে জেলা আইনজীবী সমিতি এবং জামায়াত উভয়ই পেশাগত শৃঙ্খলা এবং নৈতিকতা রক্ষা করার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে। আইনমন্ত্রণালয় এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেলকে অভিযোগের কপি প্রেরণ করা হয়েছে। স্থানীয় আইনজীবী ও নাগরিকরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।