বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কক্সবাজার: টেকনাফের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে ফেরার পথে নৌকাসহ ১২ জেলেকে অপহরণ করেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। শনিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও ট্রলার মালিকরা অভিযোগ করেছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “নৌকাসহ ১২ জেলে আটক হওয়ার বিষয়টি আমরা শুনেছি। এখন আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি, যাতে জেলেরা দ্রুত নিরাপদে ফিরতে পারে।”
অপহৃত জেলেদের মধ্যে রয়েছেন মো. আলি আহমদ (৩৯), মোহাম্মদ আমিন (৩৪), ফজল করিম (৫২), কেফায়েত উল্লাহ (৪০), সাইফুল ইসলাম (২৩), সাদ্দাম হোসেন (৪০), মো. রাসেল (২৩), মো. সোয়াইব (২২), আরিফ উল্লাহ (৩৫), মোহাম্মদ মোস্তাক (৩৫) ও নুরুল আমিন (৪৫)। একজনের নাম এখনও জানা যায়নি। সবাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।
নৌকার মালিক সোলতান আহমেদ জানান, তার নৌকায় ১২ জেলে মাছ শিকার করতে যায় বঙ্গোপসাগরে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে তারা ফেরার পথে ছিল। এসময় আরাকান আর্মির সদস্যরা নৌকাসহ জেলেদের ধরে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, “এ ধরনের ঘটনা এখানে প্রায়ই ঘটছে। এর স্থায়ী সমাধান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।”
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে জানা গেছে, গত আট মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদসহ সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ২৩৩ জন জেলেকে অপহরণ করেছে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ১৫১ জন জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। বিজিবির সহায়তায় এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কয়েক দফায় নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
নিকট অতীতের ঘটনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ২০২৩ সালের নভেম্বরেও টেকনাফের কুতুপালং এলাকা থেকে ৯ জন জেলেকে অপহরণ করা হয়েছিল। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে একই এলাকার নৌকা অভিযান চলাকালে আরাকান আর্মি ৮ জন জেলেকে তুলে নিয়ে যায়। এই ধরনের ঘটনা সীমান্তবর্তী জেলেদের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক জীবনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্থানীয় জেলেদের ওপর নিয়মিত এই ধরনের আক্রমণ তাদের জীবিকা ও সামুদ্রিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তারা বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এই কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।