Home আন্তর্জাতিক মার্কিন শুল্কবৃদ্ধিতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে ভারতের রপ্তানি খাত

মার্কিন শুল্কবৃদ্ধিতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে ভারতের রপ্তানি খাত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে নতুন শুল্কবৃদ্ধি দেশীয় রপ্তানিকে সরাসরি প্রভাবিত করেছে। সম্প্রতি আমেরিকা ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে, যার ফলে গড় শুল্কহার প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রভাব পড়ছে পোশাক, টেক্সটাইল, চিংড়ি, কার্পেট এবং বিলাসপণ্য খাতে, যা ভারতের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার অবস্থান দুর্বল করছে।

পোশাক খাতে শুল্ক বৃদ্ধি হয়েছে ৬০.৩ থেকে ৬৩.৯ শতাংশ পর্যন্ত। গত বছর এই খাতে ভারতের রপ্তানি আয় ছিল ৫.৪ বিলিয়ন ডলার। টেক্সটাইল শিল্পও একই অবস্থায় রয়েছে; ৫৯ শতাংশ শুল্কের কারণে উৎপাদন প্রায় স্থবির হয়ে গেছে। চিংড়ি রপ্তানি খাতেও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হওয়ায় গত বছর ২ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি এবার বড় ধাক্কা খেতে চলেছে।

কার্পেট শিল্পে শুল্কের পরিমাণ ৫২.৯ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্গ্যানিক কেমিক্যাল খাতে শুল্ক ৫৪ শতাংশ আরোপিত হয়েছে, যেখানে গত বছর বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২.৭ বিলিয়ন ডলার। পেট্রোপণ্যের ওপর শুল্ক তুলনামূলকভাবে কম, ৬.৯ শতাংশ, কিন্তু ৪.১ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি ক্ষতির মুখে পড়ছে। হীরা, সোনা এবং অন্যান্য মূল্যবান পাথরের রপ্তানিতেও ৫২.১ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

ভারতের স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, তামা এবং মেশিনারি শিল্পও শুল্কের প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও তামায় শুল্ক ৫১.৭ শতাংশ, মেশিনারিতে ৫১.৩ শতাংশ। গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশে তুলনামূলকভাবে কম, ২৬ শতাংশ। আসবাবপত্র রপ্তানিতেও শুল্ক ৫২.৩ শতাংশে পৌঁছেছে।

তবে ব্যতিক্রম রয়েছে ওষুধ ও স্মার্টফোন খাতে। গত অর্থবছরে আমেরিকায় ভারতের ওষুধ রপ্তানি ছিল ৯.৮ বিলিয়ন ডলার। স্মার্টফোন রপ্তানিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ভারতের তৈরি আইফোনের রপ্তানি ছিল ১০.৬ বিলিয়ন ডলার।

‘গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ’-এর অনুমান অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ভারতের আমেরিকান রপ্তানি প্রায় ৪৩ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে, যা ৮৭ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ৪৯.৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধাক্কা মোকাবিলায় ভারতকে বিকল্প বাজার সম্প্রসারণ, আর্থিক সহায়তা ও কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন।