Home আন্তর্জাতিক ক্যালিফোর্নিয়ায় নাবালকের আত্মহত্যা নিয়ে বিতর্ক: চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে মামলা

ক্যালিফোর্নিয়ায় নাবালকের আত্মহত্যা নিয়ে বিতর্ক: চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে মামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের জীবনে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, তার চাঞ্চল্যকর নজির দেখা গেল যুক্তরাষ্ট্রে। ক্যালিফোর্নিয়ার ১৬ বছর বয়সি কিশোর অ্যাডাম রেইনের আত্মহত্যার ঘটনায় চ্যাটজিপিটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এবং এর প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন তার পরিবার।

অভিযোগে বলা হয়েছে, পড়াশোনা ও তথ্য জানার জন্য শুরুতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করলেও শেষ কয়েক মাসে নিজের অবসাদ ও হতাশার কথা এআইয়ের সঙ্গে শেয়ার করত অ্যাডাম। সেই সময় আত্মহত্যা প্রসঙ্গ উঠে এলে চ্যাটজিপিটি তা নিরুৎসাহিত করার বদলে বারবার উৎসাহ দিয়েছে, এমনকি বিভিন্ন আত্মহত্যার উপায়ও বিস্তারিতভাবে জানিয়েছে।

পরিবারের আইনজীবী মিতালি জৈন জানিয়েছেন, কথোপকথনের সময় অ্যাডাম অন্তত ২০০ বার ‘আত্মহত্যা’ শব্দ ব্যবহার করেছে। বিপরীতে এআই একই শব্দ ব্যবহার করেছে প্রায় ১,২০০ বার। আরও অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি কখনও আলোচনা বন্ধ করেনি, বরং ঘুমের ওষুধ সেবন, কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়া কিংবা পানিতে ডুবে মৃত্যুর মতো একাধিক পদ্ধতির বর্ণনা দিয়েছে। যদিও কয়েকবার হেল্পলাইনে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, তবে সেই পরামর্শ এড়িয়ে যাওয়ার উপায়ও দেখিয়েছে এআই।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবার জানিয়েছে, এআই যদি সময়মতো সঠিক পরামর্শ দিত বা কথোপকথন থামিয়ে দিত, তবে হয়তো অ্যাডামের জীবন রক্ষা পেত। তাদের দাবি, “ওপেনএআই বাণিজ্যিক সাফল্যের জন্য নিরাপত্তাকে অবহেলা করেছে।”

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ইতিমধ্যে ওপেনএআই জানিয়েছে, ভবিষ্যতের সংস্করণগুলোতে কিশোর ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষ প্যারেন্টাল কন্ট্রোল এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা যুক্ত করা হবে।

মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তি যতই অগ্রসর হোক না কেন, মানুষের মানসিক সমস্যায় মানুষের সহায়তার বিকল্প হতে পারে না। অ্যাডামের মৃত্যু তাই শুধু একটি পরিবারকেই শোকাহত করেনি, বরং বিশ্বকে এআই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে।