বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: আগস্ট মাসে দেশের মূল্যস্ফীতি তিন বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যে দেখা যাচ্ছে, পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে আগস্টে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশে, যা জুলাইয়ের তুলনায় ০ দশমিক ২৬ শতাংশ কম। তবে এই পতন মূলত খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দামে স্বস্তি আসার ফল।
অন্যদিকে, খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৬০ শতাংশে। অর্থাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেই মানুষের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি থেকে যাচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষের ব্যয় কাঠামোর বড় অংশ খাদ্য খাতে হওয়ায় সামান্য ঊর্ধ্বগতি তাদের জন্য পুরো বাজেটকে অস্থির করে তোলে।
এছাড়া, খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে গেলেও তা অস্থায়ী প্রভাবের কারণে হয়েছে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। টেকসই নিয়ন্ত্রণের জন্য সরবরাহ ব্যবস্থা, আমদানি নীতি ও বাজার মনিটরিংয়ে ধারাবাহিক সংস্কার অপরিহার্য।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, টানা ৪৩ মাস ধরে মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির নিচে রয়েছে। আগস্টে মজুরি বৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ, যা ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিতে ব্যর্থ। ফলে প্রকৃত আয় হ্রাস পাচ্ছে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ার বদলে আরও চাপে পড়ছে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো।
অর্থনীতিবিদদের মতে, দীর্ঘমেয়াদে শুধু মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই যথেষ্ট নয়; মজুরি বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ এবং খাদ্য খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এখন সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। না হলে সার্বিক অর্থনৈতিক সূচক উন্নতি দেখালেও সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।