আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লাদাখে যে অশান্তি দেখা দিয়েছে, তা মূলত রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক অসন্তোষের ফল। ২৪ সেপ্টেম্বর লেহ শহরে সহিংস বিক্ষোভের ঘটনায় চারজন নিহত এবং ৮০ জনেরও বেশি আহত হন। এই বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু ছিল লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ও সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় আনার দাবি।
বিক্ষোভের পেছনের কারণ
লাদাখের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইনের মাধ্যমে লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যার ফলে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন কমে যায়। এই পরিবর্তন লাদাখবাসীর মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়। গত কয়েক বছর ধরে সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল, কিন্তু সম্প্রতি আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়।
সহিংসতার ঘটনা
২৪ সেপ্টেম্বরের বিক্ষোভের সময় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হন এবং ৮০ জনেরও বেশি আহত হন। বিক্ষোভকারীরা বিজেপি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। এই ঘটনায় সোনম ওয়াংচুককে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাঁর এনজিওর লাইসেন্স বাতিল করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে ‘প্ররোচনামূলক বক্তব্য’ দেওয়ার জন্য দায়ী করেছে, যদিও তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বর্তমান পরিস্থিতি
লাদাখের লেহ অ্যাপেক্স বডি (LAB) জানিয়েছে যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনায় অংশ নেবে না। তারা ২৪ সেপ্টেম্বরের পুলিশের গুলির ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, তারা যে কোনো সময় আলোচনায় প্রস্তুত, তবে LAB তাদের অবস্থানে অটল রয়েছে।
লাদাখের অশান্তি শুধুমাত্র একটি স্থানীয় সমস্যা নয়; এটি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি জনগণের অসন্তোষের প্রতিফলন। যতদিন না লাদাখবাসীর দাবি মেনে না নেওয়া হবে, ততদিন এই অশান্তি অব্যাহত থাকতে পারে।