Home আন্তর্জাতিক এবার মরক্কোয় ছড়িয়ে পড়েছে তরুণদের আন্দোলন

এবার মরক্কোয় ছড়িয়ে পড়েছে তরুণদের আন্দোলন

ছবি সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মরক্কোয় ছড়িয়ে পড়েছে তরুণদের আন্দোলন, যা এখন পরিচিতি পাচ্ছে ‘জেন-জি আন্দোলন’ নামে। টিকটক, ইনস্টাগ্রাম ও ডিসকোর্ডের মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে গড়ে ওঠা এই ঢেউ গত চার দিনে রাজপথ কাঁপিয়ে তুলেছে।

দক্ষিণের ইনজেগানে, আইত আমিরা, তিজনিত থেকে শুরু করে পূর্বাঞ্চলীয় উজদা এবং রাজধানী রাবাত সংলগ্ন তেমারা— সর্বত্র তরুণদের বিক্ষোভে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ব্যাংক, গাড়ি ও পুলিশের যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উজদায় এক বিক্ষোভকারী নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন।

রাজধানী রাবাতেই আটক হয়েছেন শত শত তরুণ। মানবাধিকার সংগঠন AMDH জানিয়েছে, শুধুমাত্র রাজধানীতেই গত কয়েক দিনে দুই শতাধিক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যদিও বেশিরভাগকে পরে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। ৩৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে এবং আগামী ৭ অক্টোবর থেকে তাদের বিচার শুরু হওয়ার কথা।

তরুণদের ক্ষোভ
বিক্ষোভকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য কোটি কোটি ডলার ব্যয় করা হলেও হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ নেই, শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। রাস্তায় শ্লোগান উঠেছে— “স্টেডিয়াম আছে, হাসপাতাল কোথায়?”

মরক্কোয় বর্তমানে বেকারত্বের হার ১২.৮ শতাংশ। এর মধ্যে তরুণদের বেকারত্ব ৩৫.৮ শতাংশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রিধারীদের মধ্যে ১৯ শতাংশ। সম্প্রতি আগাদিরের এক সরকারি হাসপাতালে আটজন গর্ভবতী নারীর মৃত্যু দেশজুড়ে ক্ষোভকে আরও উসকে দিয়েছে।

সরকারি প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট
শাসক জোট তরুণদের দাবির প্রতি সংলাপে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে মানবাধিকার কর্মীরা সরকারের প্রতিক্রিয়াকে দমনমূলক আখ্যা দিয়েছেন।

এই তরুণ-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন শুধু মরক্কোতেই নয়, বরং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নতুন এক প্রজন্মের রাজনৈতিক জাগরণের প্রতিচ্ছবি। এর আগে নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও মাদাগাস্কারে একই ধরনের জেন-জি আন্দোলনে সরকারকেও নতি স্বীকার করতে হয়েছে।

মরক্কোয় আন্দোলনের তরঙ্গ এখন প্রশ্ন তুলছে— “জনগণের অর্থে বিশ্বকাপ, কিন্তু জনগণের জন্য হাসপাতাল কবে?”