বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: গত ২৩ সেপ্টেম্বর ভারতের কর্নাটকের কেআইএমসি-তে এক মহিলা পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। মা ও শিশু দু’জনেই সুস্থ থাকলেও পরবর্তীতে শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে চিকিৎসকেরা অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পান। আল্ট্রাসাউন্ডে দেখা যায়, নবজাতকের পেটের ভিতরে আর একটি প্রাণ বড় হচ্ছে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই বিরল ঘটনা ‘ফেটাস ইন ফেটু’ বা ফিফ (Fetus in Fetu) নামে পরিচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি ৫ লক্ষ ভূমিষ্ঠ সন্তানের মধ্যে মাত্র একটি ক্ষেত্রে এই অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়। গর্ভাবস্থায় এক যমজের ভ্রূণের ভিতরে আরেকটি ভ্রূণ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
কেআইএমসিতে জন্ম নেওয়া শিশুর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, পেটের মধ্যে থাকা অঙ্গটি ক্রমশ যমজের প্রাথমিক কাঠামো যেমন মেরুদণ্ড, খুলির হাড় ইত্যাদি বিকশিত করছে। চিকিৎসকেরা জানান, এই ভ্রূণ স্বাভাবিকভাবে বিকশিত হতে পারবে না এবং এটি মূল শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
চিকিৎসকদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, শিশুর শরীরে থাকা ‘পরজীবী যমজ’ একটি বিরল জন্মগত অবস্থা। এটি আদতে একটি জার্ম সেল টিউমার হতে পারে, যার মধ্যে দাঁত, চুল, হাড় বা পেশি জাতীয় টিস্যু অপরিণতভাবে গঠিত হতে পারে। শিশুর সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনের জন্য একে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সরিয়ে দিতে হবে। শিশুর বাবা-মায়ের সম্মতিতে শীঘ্রই এই জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গর্ভস্থ এই বিরল যমজ সাধারণত শিশুর পেটে একটি পিণ্ডের মতো আকারে দেখা দেয় এবং ক্রমশ বড় হতে থাকে।
অতীতের উল্লেখযোগ্য ঘটনা:
- মহারাষ্ট্রের বুলঢানায় ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক শিশুর পেটে অপরিণত ভ্রূণ পাওয়া যায়।
- বাংলাদেশের এক ৯ বছরের মেয়ের পেটে ২০২০ সালে ‘ফেটাস ইন ফেটু’ অবস্থার অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
- ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাঁচিতে ২১ দিন বয়সী নবজাতকের পেটে আটটি অপরিণত ভ্রূণ পাওয়া যায়।
- ভারতের নাগপুরে এক পুরুষ দীর্ঘদিন নিজের পেটে অপরিণত যমজ ভাই বহন করছিল, পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তা বের করা হয়।
এইসব ঘটনা ‘ফেটাস ইন ফেটু’ অবস্থার বিরলতা ও গুরুত্বকে তুলে ধরে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে শিশুর সুস্থ জীবন নিশ্চিত করা সম্ভব।