Home আকাশ পথ ১৪ অক্টোবর ব্রাসেলসের আকাশ বন্ধ: ধর্মঘটে বিপর্যস্ত হবে ৭০ হাজার যাত্রী

১৪ অক্টোবর ব্রাসেলসের আকাশ বন্ধ: ধর্মঘটে বিপর্যস্ত হবে ৭০ হাজার যাত্রী

 এভিয়েশন ডেস্ক: বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের আকাশে ১৪ অক্টোবর থেমে যাবে উড়োজাহাজ চলাচল। সেদিন দেশটির দুই প্রধান বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকর্মী ও গ্রাউন্ড স্টাফদের ধর্মঘটের কারণে সব ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ৭০ হাজার যাত্রী ভ্রমণ বিপর্যয়ের মুখে পড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ব্রাসেলস এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওইদিন সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের যাত্রা বাতিল করা হবে। অন্যদিকে ব্রাসেলস সাউথ শারলোরোয়া এয়ারপোর্টেও সব ফ্লাইট স্থগিত থাকবে।

প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০টি উড়োজাহাজ ব্রাসেলস বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়। এটি ইউরোপের অন্যতম ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক হাব, যেখান থেকে লন্ডন হিথ্রো, বার্মিংহাম, ম্যানচেস্টার ও এডিনবরা সহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিমানবন্দরে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালিত হয়।

যদিও আগত (inbound) কিছু ফ্লাইট আংশিকভাবে চালু থাকতে পারে, তবে অংশগ্রহণের মাত্রা ও এয়ারলাইন স্টাফদের অবস্থার ওপর নির্ভর করবে এই সিদ্ধান্ত।

ব্রাসেলস বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে—“১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার জাতীয় শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে আমাদের নিরাপত্তা সেবা প্রদানকারীর কর্মীরা কর্মবিরতিতে অংশ নিচ্ছেন। যাত্রী ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে, আমরা এয়ারলাইনগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে সেদিন কোনো যাত্রীবাহী ফ্লাইট উড্ডয়নের অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

শারলোরোয়া বিমানবন্দরের মুখপাত্র নাথালি পিয়েরার্ড বলেন—“যৌথ ট্রেড ইউনিয়নের উদ্যোগে জাতীয় আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায় ১৪ অক্টোবর আমাদের বিমানবন্দরে নির্ধারিত সব ফ্লাইট বাতিল করা হবে।”

এই ধর্মঘট বেলজিয়ামে চলমান শ্রম আন্দোলনেরই অংশ, যা সরকারের প্রস্তাবিত অবসর গ্রহণের বয়স বৃদ্ধি ও পেনশন সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে পরিচালিত হচ্ছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও একই ইস্যুতে ধর্মঘটের কারণে ব্রাসেলস বিমানবন্দরের ৪৩০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল।

বেলজিয়ামের এই জাতীয় ধর্মঘট ১৪ অক্টোবর বিভিন্ন সেক্টরে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে পরিবহন খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এয়ার প্যাসেঞ্জার রাইটস সংস্থা স্কাইরিফান্ডের সিইও ইভালিও দানিলভ এ বিষয়ে বলেন—“সম্প্রতি ইউরোপজুড়ে বিমান চলাচল খাতে বহু ধর্মঘট হয়েছে, যার ফলে হাজার হাজার যাত্রীর ভ্রমণ বিঘ্নিত হয়েছে। যাত্রীদের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করা জটিল হতে পারে, কারণ এয়ারলাইনের কর্মীদের ধর্মঘট প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও, গ্রাউন্ড বা বিমানবন্দর কর্মীদের ধর্মঘট সাধারণত এর বাইরে পড়ে।”

তিনি আরও বলেন,“যাত্রীরা যেন তাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ সম্পর্কে জানতে পারেন, সে জন্য বিনামূল্যে ক্ষতিপূরণ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা উচিত। তবে ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হলেও, যাত্রীদের প্রতি এয়ারলাইনের দায়বদ্ধতা রয়েছে—যেমন খাবার, পানীয় এবং প্রয়োজন হলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।”

 ১৪ অক্টোবরের এই ব্যাপক ধর্মঘটে ব্রাসেলসের আকাশে থেমে যাবে প্রায় সব ফ্লাইট, আর ইউরোপের হাজারো যাত্রীকে মুখোমুখি হতে হবে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ভ্রমণ বিশৃঙ্খলার।