Home জাতীয় শাহজালালে কার্গো ভিলেজে আগুন: মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিকেই বিপর্যয়ের সূত্র!

শাহজালালে কার্গো ভিলেজে আগুন: মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিকেই বিপর্যয়ের সূত্র!

সংগৃহীত ছবি
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুনের ঘটনায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ও সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা নিয়ে। তদন্তে জানা গেছে, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে স্তূপাকারে পড়ে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক দ্রব্যই ছিল আগুন ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ।

ঢাকা কাস্টমস সূত্র জানায়, এই কমপ্লেক্সে জিংক ক্লোরাইড, কেমিক্যাল পাউডার, অতি দাহ্য এভারক্লিয়ার, বিষাক্ত কীটনাশক ক্লোরপাইরিফস ও জৈব রঞ্জকসহ বিপজ্জনক রাসায়নিক দ্রব্য দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনার মধ্যে পড়ে ছিল। এদের বেশিরভাগই বাজেয়াপ্ত বা মেয়াদোত্তীর্ণ।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, এসব দাহ্য পদার্থের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রায় ২৭ ঘণ্টা চেষ্টার পর তা নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে ৩৭টি ইউনিটসহ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা অংশ নেন।

কাস্টমসের এক কর্মকর্তা বলেন, “গত মে মাসেই ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক দ্রব্য সরিয়ে ফেলার সুপারিশ করা হয়েছিল, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দায়িত্ব ছিল পণ্য নামানো, সংরক্ষণ ও হ্যান্ডলিংয়ের। কিন্তু তারা কাস্টমসকে একাধিকবার তাগাদা দেওয়ার পরও নিলাম ও ধ্বংসের কাজ হয়নি। ফলে বছরের পর বছর ধরে এসব বিপজ্জনক পণ্য কমপ্লেক্সে থেকে যায়।

এদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)ও নিরাপত্তা তদারকির দায়িত্বে থাকলেও তারা এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

রপ্তানিকারকেরা বলছেন, “বিমানবন্দরের সীমিত অবকাঠামো, দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও সংস্থাগুলোর উদাসীনতা মিলে এমন বিপর্যয় অনিবার্য ছিল।”

বিশ্লেষকদের মতে, শাহজালাল বিমানবন্দরের এই অগ্নিকাণ্ড শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং এটি দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক উদাসীনতা ও ব্যবস্থাপনা ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।

আগুনে পুড়ে গেছে বিপুল পরিমাণ গার্মেন্টস পণ্য, ওষুধশিল্পের কাঁচামাল ও আমদানি করা রাসায়নিক দ্রব্য। প্রাথমিক হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে।

ঢাকা কাস্টম হাউস জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড স্পষ্ট করেছে—দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দরের কার্গো ব্যবস্থাপনায় এখনই বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। অন্যথায় এমন দুর্ঘটনা ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।

🔥 আপনার মতামত দিন: আপনি কি মনে করেন, কার্গো ব্যবস্থাপনায় দায় কার বেশি—কাস্টমস, বিমান বাংলাদেশ, নাকি বেবিচক?
💬 নিচে কমেন্টে জানান আপনার মতামত।