Home আন্তর্জাতিক সিআইএর প্রাক্তন কর্মকর্তার বিস্ফোরক দাবি: নারীর ছদ্মবেশে পালিয়েছিলেন বিন লাদেন

সিআইএর প্রাক্তন কর্মকর্তার বিস্ফোরক দাবি: নারীর ছদ্মবেশে পালিয়েছিলেন বিন লাদেন

বিন লাদেন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০০১ সালে আফগানিস্তানের তোরা বোরার পাহাড়ে মার্কিন বাহিনীর হাতে প্রায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নারীর ছদ্মবেশ ধারণ করে একটি পিকআপ ট্রাকে চড়ে পাকিস্তানে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন তিনি। ৯/১১ হামলার পর মার্কিন বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের মধ্যেও এই পলায়নের ঘটনা নিয়ে নতুন তথ্য ফাঁস করেছেন সিআইএর প্রাক্তন কর্মকর্তা জন কিরিয়াকু।

১৫ বছর ধরে সিআইএ-তে কর্মরত থাকা এবং পাকিস্তানে কাউন্টার টেররিজম অপারেশনের নেতৃত্বদানকারী কিরিয়াকু এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মার্কিন বাহিনীর গাফিলতি এবং আল-কায়েদার অনুপ্রবেশের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছিল। তাঁর দাবি অনুযায়ী, ২০০১ সালের অক্টোবরে আফগানিস্তানের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে আল-কায়েদার ঘাঁটিতে হামলার পর মার্কিন বাহিনী নিশ্চিত ছিল যে তোরা বোরায় বিন লাদেনসহ শীর্ষ নেতৃত্ব কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।

কিন্তু এখানেই ঘটে বিশ্বাসঘাতকতা। কিরিয়াকুর মতে, মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের এক দোভাষী আসলে আল-কায়েদার সদস্য ছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা জানতাম না যে ওই দোভাষী আল-কায়েদার একজন অপারেটিভ, যিনি ছদ্মবেশে মার্কিন বাহিনীতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন।”

কিরিয়াকুর বক্তব্য অনুযায়ী, বিন লাদেন ওই দোভাষীর মাধ্যমে মার্কিন জেনারেল ফ্র্যাঙ্কসকে অনুরোধ পাঠান যে নারী ও শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য ভোর পর্যন্ত সময় দেওয়া হোক, এরপর তারা আত্মসমর্পণ করবে। দোভাষী সফলভাবে এই বার্তাটি এমনভাবে উপস্থাপন করেন যে জেনারেল ফ্র্যাঙ্কস তা মেনে নেন। আর সেই সময়ের বিরতি কাজে লাগিয়ে বিন লাদেন রাতের অন্ধকারে নারীর বেশে পিকআপ ট্রাকে করে পাকিস্তানে পালিয়ে যান।

ভোরে মার্কিন বাহিনী যখন নতুন করে আক্রমণ শুরু করে, তখন দেখা যায় আল-কায়েদার কেউই সেখানে নেই। ফলে যুদ্ধের ক্ষেত্র আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে পাকিস্তান সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।

জন কিরিয়াকু আরও দাবি করেন, পাকিস্তানের সহযোগিতা পেতে ওয়াশিংটন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফকে অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তার আশ্বাস দিয়ে “কিনে নিয়েছিল।” তাঁর ভাষায়, মোশাররফ একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করতেন, আবার অন্যদিকে সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোর মন রক্ষা করতে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সুযোগ দিতেন।

তিনি আরও জানান, ২০০২ সালে লাহোরে লস্কর-ই-তৈবার এক গোপন আস্তানায় সিআইএর অভিযানে প্রথমবার আল-কায়েদা ও লস্কর-ই-তৈবার মধ্যে যোগসূত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে কৌশলগত কারণে হোয়াইট হাউস সে সময় পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট না করার জন্য বিষয়টি চেপে যায়।

এই সাক্ষাৎকারে কিরিয়াকুর উত্থাপিত তথ্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, কারণ এটি ৯/১১-পরবর্তী সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রহস্যের ওপর নতুন দৃষ্টিকোণ হাজির করছে।