Home বিনোদন মাটির শিল্প আর পিঠার সুগন্ধে মুখর ঠাকুরগাঁও

মাটির শিল্প আর পিঠার সুগন্ধে মুখর ঠাকুরগাঁও

এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই

মো:সোহেল রানা, ঠাকুরগাঁও: শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ঠাকুরগাঁওয়ে সৃজনশীলতা ও স্বাদকে একসঙ্গে উপভোগ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত মৃৎশিল্প প্রদর্শনী ও পিঠা মেলা। রবিবার (২ নভেম্বর) ডিসি পর্যটন পার্ক প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই দিনব্যাপী মেলা শিক্ষার্থীসহ সকল বয়সী দর্শনার্থীদের মন জয় করেছে।

“এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই” প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে আয়োজন করা হয়েছে এ উৎসব, যা তারুণ্যের উৎসব ২০২৫-এর অংশ। বিকেলে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা মেলার উদ্বোধন করেন।

মেলায় চারদিকে সাজানো ছিল বাহারি পিঠার স্টল—ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, মালপোয়া, নকশী ও বিবিয়ানা পিঠা—যা দর্শনার্থীদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছিল। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা তাদের হাতে তৈরি পিঠা বিক্রির পাশাপাশি মৃৎশিল্পীরা তাদের সৃজনশীল শিল্পকর্ম প্রদর্শন করছিলেন। দর্শনার্থীরা পছন্দমতো পিঠা খেয়ে দেখছেন এবং কিছু কিনেও নিচ্ছেন।

একজন দর্শনার্থী বলেন, “শীতের শুরুতে এমন আয়োজন প্রতিবছর হওয়া উচিত। পিঠার স্বাদ ও মাটির শিল্পের সংমিশ্রণ সত্যিই আনন্দদায়ক।”

মৃৎশিল্পীরা জানান, মেলার আগে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ফলে তারা নিজেদের হাতে তৈরি পণ্য প্রদর্শন করতে পারছেন। তবে বিক্রি প্রত্যাশার তুলনায় কম হওয়ায় তারা কিছুটা হতাশ। পিঠা বিক্রেতারা বলছেন, মেলার প্রচার কম হওয়ায় দর্শনার্থীর সংখ্যা সীমিত ছিল। তারা মনে করেন, মেলাটি যদি কয়েকদিনব্যাপী হতো, তাহলে বাঙালির ঐতিহ্য আরও সুন্দরভাবে তুলে ধরা যেত।

জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, “এ ধরনের আয়োজন তরুণ প্রজন্মকে সংস্কৃতিমনা ও সৃজনশীল করে তুলবে। আমরা চাই তরুণরা শুধু প্রযুক্তির প্রতি নির্ভর না হয়ে দেশের ঐতিহ্য ও ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হোক।”

দিনব্যাপী এ মেলায় জেলার বিভিন্ন এলাকার শিল্পী, কারিগর ও উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শীতের আগমনী বার্তায় ঠাকুরগাঁওবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে এ ধরনের আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ) সরদার মোস্তফা শাহিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বুলবুল আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তি) মেহনাজ ফেরদৌস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হক সুমনসহ বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

মেলাটি শুধু শীতের আনন্দই নয়, বরং দেশের ঐতিহ্য ও সৃজনশীলতার পরিচায়ক হিসেবেও স্থান করে নিয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে।