বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, পঞ্চগড়: দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বাংলাবান্ধা সীমান্ত মঙ্গলবার হয়ে উঠে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী। ১১৭ ফুট উচ্চতায় উড়ছে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের লাল-সবুজ পতাকা, যা দেশের সর্বোচ্চ ফ্ল্যাগস্ট্যান্ডে প্রদর্শিত হচ্ছে।
বেলা ৩টায় জেলা প্রশাসক মো: সাবেত আলী পতাকা স্ট্যান্ডের উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, “স্থানীয় মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সর্বোচ্চ এই ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা নতুন এক ইতিহাসের সাক্ষী হলাম। এই পতাকা আমাদের গৌরবের-অহংকারের প্রতীক। দেশের সার্বভৌমত্বের প্রকাশ এটি।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি, ১৮ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মনিরুল ইসলাম, জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বিএনপি নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ইকবাল হোসাইন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।
জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলম বলেন, “আগামীর বাংলাদেশে এই স্বাধীন পতাকার দিকে, সার্বভৌমত্বের দিকে কেউ যদি আধিপত্যবাদের দৃষ্টিতে তাকানোর চেষ্টা করে, আমরা সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব। পৃথিবীর যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আমাদের দিকে আধিপত্যবাদের দৃষ্টিতে তাকাতে পারবে না।”
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই গৌরবের পতাকা সমুন্নত রাখতে অঙ্গীকার করছি।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম কাচ্চু, তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন রনজু, জেলা জাগপার সহসভাপতি শামসুজ্জামান বিপ্লব, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মাহফুজার রহমান, জেলা সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তি, সাংবাদিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে জিরোপয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। স্থানীয়রা এই মুহূর্তকে ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে মনে করছেন। যুবক আরিফুর রহমান বলেন, “আমাদের প্রিয় বাংলাবান্ধায় দেশের সর্বোচ্চ পতাকা উড়ছে, এটা আমাদের গর্বের বিষয়।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, “বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে দেশের সর্বোচ্চ এই ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এটি জাতীয় চেতনার প্রতীক হয়ে থাকবে। স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের কারিগরি সহযোগিতায় এটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।”
জেলা প্রশাসক মো: সাবেত আলী আরও বলেন, “দেশের সর্বোত্তরের প্রান্তে এই পতাকা বাংলাদেশের মর্যাদা ও সার্বভৌমত্বের প্রতিচ্ছবি হয়ে থাকবে। এটি তেঁতুলিয়ার পর্যটন সম্ভাবনাকেও আরো উজ্জ্বল করবে।”
বাংলাবান্ধা ফ্ল্যাগস্ট্যান্ডের উদ্বোধন কেবল একটি স্থাপত্যের উদাহরণ নয়, বরং জাতীয় চেতনার উজ্জ্বল প্রতীক হিসেবে দেশের মানুষের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নেবে।










