আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার উলসান শহরের ইস্ট-ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র (Ulsan Thermal Power Plant)-এ (১১ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর ধসে পড়ে দুটি বিশাল বয়লার ভবন। প্রায় ৬৩ মিটার উঁচু, ২৫ মিটার চওড়া এবং ১৫ মিটার গভীর ওই দুটি টাওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ভূপাতিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণে ব্যবহার করা হয় ১৪০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ও ১২০টি ডেটোনেটর, যা দিয়ে ২০ তলা একটি ভবন ৫ সেকেন্ডে ধ্বংস করা সম্ভব। বিস্ফোরকগুলো ভবনের স্তম্ভে লাগানো ছিল। নির্ধারিত সময় দুপুর ১২টায় বিস্ফোরণ ঘটতেই দুটি ভবন পরিকল্পনামাফিক সামনে দিকে ধসে পড়ে।
বিস্ফোরণের কম্পন এতটাই প্রবল ছিল যে, ঘটনাস্থল থেকে ৩০০ মিটার দূরের রাস্তা পর্যন্ত কম্পন অনুভূত হয়। ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘন ধুলোর মেঘ আকাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রায় তিন মিনিট সময় লাগে ধুলো স্তিমিত হতে। ঘটনাস্থলে উপস্থিতদের অনেকে জানান, আঙুল-সমান মোটা ধাতব টুকরো ৩০০ মিটার দূর পর্যন্ত উড়ে যায় এবং বাতাসে বারুদের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
কেন্দ্রীয় দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এক ঘণ্টা পর জানায়, “দুপুর ১২টায় পরিকল্পনা অনুযায়ী বয়লার টাওয়ারের বিস্ফোরণ সম্পন্ন হয়েছে।” তারা আরও জানায়, “দুর্ঘটনাস্থলে ইউনিট ৫-এর অবস্থা যাচাই এবং প্রবেশপথ নিরাপদভাবে নিশ্চিত করার কাজ চলছে।”
দুপুর ৩টা ৪০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ উদ্ধার অভিযান পুনরায় শুরু করার ঘোষণা দেয়। বড় আকারের ক্রেন ঘটনাস্থলে আনা হয় এবং উদ্ধারকর্মীরা পরিস্থিতি মূল্যায়ন সভায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
দমকল বিভাগ জানায়, চারজন নিখোঁজ ব্যক্তির মধ্যে দুজনের অবস্থান চিহ্নিত করা গেছে। একজন ইউনিট ৪-এর দিকে, আরেকজন ইউনিট ৬-এর দিকে, দুজনই প্রবেশদ্বারের কাছাকাছি, প্রায় ৫ মিটারের মধ্যে। তবে ধসে পড়া লোহার কাঠামোর কারণে এখনো উদ্ধারকর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারেননি।
উদ্ধার দল জানায়, তারা কাটিং যন্ত্রের মাধ্যমে ধাতব কাঠামো কেটে প্রবেশপথ তৈরি করবেন। উদ্ধারকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য ধসে পড়া কাঠামোর নিচে সাপোর্ট স্ট্রাকচার স্থাপন করা হবে।
অন্য দুই নিখোঁজ ব্যক্তির অবস্থান জানতে উদ্ধারকাজে সহায়তা করবে সার্চ কুকুর ও বিশেষ ডিটেকশন যন্ত্র। ফায়ার সার্ভিসের একজন মুখপাত্র জানান, “সব নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধারের আগ পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা অভিযান চলবে।”










