Home আকাশ পথ ইথিওপিয়ার আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে আকাশপথে ভয়াবহ বিপর্যয়

ইথিওপিয়ার আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে আকাশপথে ভয়াবহ বিপর্যয়

ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যে ফ্লাইট বাতিল, সতর্কতা জারি

এভিয়েশন ডেস্ক: ইথিওপিয়ার বিরল আগ্নেয়গিরি ‘হায়লি গুব্বি’-তে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে সৃষ্ট বিশাল ছাইয়ের মেঘ আকাশসীমার অনেক উঁচুতে ছড়িয়ে পড়ায় আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলে বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর এভিয়েশন সেক্টরে এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে এবং বেশ কয়েকটি দেশে জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ভারতে বড় প্রভাব ও ডিজিসিএ-এর সতর্কতা
আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের কারণে ভারতের বিমান চলাচল ব্যবস্থা বাধার মুখে পড়েছে। দেশটির এভিয়েশন রেগুলেটর ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (DGCA) ইতিমধ্যে বিমান সংস্থা ও বিমানবন্দরগুলোর জন্য জরুরি সতর্কতা জারি করেছে।

ফ্লাইট বাতিল: আকাশা এয়ার (Akasa Air) তাদের জেদ্দা, কুয়েত ও আবুধাবি রুটের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো বাতিল ঘোষণা করেছে। এছাড়া ইনডিগো (IndiGo) এবং কেএলএম (KLM)-এর মতো বড় বিমান সংস্থাগুলোও ফ্লাইট বাতিল অথবা রুট পরিবর্তনের পথে হাঁটছে।

নির্দেশনা: ডিজিসিএ পাইলটদের ছাই-প্রভাবিত এলাকায় নির্ধারিত উচ্চতা মেনে চলতে অথবা ওই রুট সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া বা কেবিনে কোনো অস্বাভাবিক গন্ধ পাওয়া গেলে তা দ্রুত রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।

বিমানবন্দর সতর্কতা: রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে বা অ্যাপ্রনে আগ্নেয়গিরির ছাই জমলে তা দ্রুত শনাক্ত করে পরিষ্কার করার জন্য বিমানবন্দর অপারেটরদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্য ও গালফ রুটে অস্থিরতা
আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের মেঘটি লোহিত সাগর হয়ে বর্তমানে ওমান ও ইয়েমেনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এর ফলে ভারত থেকে মধ্যপ্রাচ্য বা গালফ রুটের ফ্লাইটগুলো সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

ওমানের পরিবেশ কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি জরুরি কেন্দ্র চালু করেছে এবং সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের এমিরেটস (Emirates), ইতিহাদ (Etihad) এবং ফ্লাইদুবাই (flydubai) জানিয়েছে, তারা এখনও সাধারণ সময়সূচি অনুযায়ী ফ্লাইট পরিচালনা করছে, তবে পরিস্থিতির ওপর তারা কড়া নজর রাখছে।

নিরাপত্তা ঝুঁকি ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগ্নেয়গিরির ছাই বিমানের ইঞ্জিনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি ইঞ্জিনে প্রবেশ করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এ কারণে বিমান সংস্থাগুলোকে রুট রি-প্ল্যানিং করতে হচ্ছে, যা পরিচালন ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এছাড়া ছাই ও বিষাক্ত গ্যাস (যেমন সালফার ডাইঅক্সাইড) দীর্ঘক্ষণ বাতাসে থাকলে তা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এভিয়েশন কর্তৃপক্ষগুলোকে এখন দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে—কোন উচ্চতায় এবং কোন রুটে বিমান চালানো নিরাপদ। যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতি এড়াতে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন সংস্থাগুলো পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে।