Home স্বাস্থ্য তরুণ প্রজন্মের নতুন চাপ: ছোট থেকে বড় সবকিছুতেই মুড সুইং

তরুণ প্রজন্মের নতুন চাপ: ছোট থেকে বড় সবকিছুতেই মুড সুইং

আচমকা মনোভাব বদলের আড়ালে চাপ, ঘুমের ঘাটতি ও ডিজিটাল ক্লান্তি

হেলথ ডেস্ক: দেশে কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে তরুণ কর্মজীবী মানুষ—সব বয়সের মধ্যেই হঠাৎ মেজাজ বদলে যাওয়া বা মুড সুইং এখন একটি সাধারণ মানসিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক জীবনযাত্রায় বাড়তি চাপ, অনিয়মিত ঘুম, দীর্ঘসময় স্ক্রিনে থাকা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব এ ধরনের মানসিক ওঠানামাকে আরও তীব্র করে তুলছে।

মনোবিজ্ঞানীরা জানান, মুড সুইং বলতে সাধারণত খুব অল্প সময়ে এক ধরনের অনুভূতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন অনুভূতিতে চলে যাওয়াকে বোঝায়। যেমন স্বাভাবিক বা সুখী অনুভূতি থেকে কয়েক মিনিটের মধ্যে বিরক্তি, দুঃখ, রাগ বা হতাশায় চলে যাওয়া। এটি অনেকের ক্ষেত্রেই শারীরিক বা মানসিক চাপে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তবে যখন এই ওঠানামা নিয়মিত হয়ে ওঠে এবং দৈনন্দিন কাজে প্রভাব ফেলে, তখন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা প্রয়োজন।

ঢাকার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মধ্যে করা একটি ছোট গবেষণায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৭০ শতাংশই সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিনদিন তীব্র মুড সুইং অনুভব করেন। গবেষণায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মতে, পরীক্ষা-চাপ, রাতজাগা অভ্যাস, অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার এবং পরিবারিক টানাপোড়েন এই ওঠানামার মূল কারণ।

চিকিৎসকদের মতে, মুড সুইং সবসময় কোনো রোগের লক্ষণ নয়। অনেক সময় কিশোর বয়সের হরমোন পরিবর্তন, ঘুমের অভাব, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বা দীর্ঘসময় একঘেয়ে কাজের কারণে এই ওঠানামা দেখা দেয়। নিয়মিত বিশ্রাম, পর্যাপ্ত পানি পান, শরীরচর্চা এবং নিজের অনুভূতিগুলো পরিবারের সঙ্গে বা বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া মানসিক স্থিতি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, মুড সুইং নিয়ে ভয় বা লজ্জা পাওয়া উচিত নয়। অনুভূতির পরিবর্তন মানুষের স্বাভাবিক আচরণের অংশ। তবে মুড সুইং যদি পড়াশোনা, সম্পর্ক বা দৈনন্দিন দায়িত্বে বাধা সৃষ্টি করে, তখন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

এই প্রতিবেদনে উঠেছে আধুনিক জীবনের দ্রুতগতি এবং ডিজিটাল চাপের একটি অদেখা দিক। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো এবং জীবনযাত্রায় কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আনলে মুড সুইং অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।