Home আন্তর্জাতিক পাকিস্তানে অনার কিলিং: মা ও কিশোরী কন্যার প্রাণ সংহার

পাকিস্তানে অনার কিলিং: মা ও কিশোরী কন্যার প্রাণ সংহার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পারিবারিক ‘সম্মান’ বা তথাকথিত ‘লজ্জা’র ধুয়া তুলে পাকিস্তানে আবারও ঘটল এক লোমহর্ষক ও হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড। এবার খোদ পরিবারের রক্ষক—স্বামীর হাতেই নৃশংসভাবে প্রাণ দিতে হলো স্ত্রীকে, এমনকি রেহাই পেল না ১১ বছরের ছোট্ট কিশোরী কন্যাও। শুক্রবার রাতে পাকিস্তানের করাচির গিজরি এলাকায় এই পৈশাচিক ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সামিউল্লাহ। নিজ বাড়িতেই তিনি তার স্ত্রী কুলসুম (৪৩) এবং তাদের কিশোরী কন্যা মরিয়মকে (১১) ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় মা ও মেয়েকে জিন্নাহ পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

করাচি সাউথ জোনের ডিআইজি সৈয়দ আসাদ রাজা নিশ্চিত করেছেন যে, এটি একটি ‘অনার কিলিং’ বা তথাকথিত সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকাণ্ড। পুলিশ অভিযুক্ত সামিউল্লাহকে গ্রেফতার করেছে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরিটি জব্দ করেছে। নিহত কুলসুমের ভাই ফয়সাল খান বাদী হয়ে পাষণ্ড স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

নিন্দনীয় সামাজিক ব্যাধি ও পরিসংখ্যান
পাকিস্তানে ‘অনার কিলিং’ একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তানের (এইচআরসিপি) এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে ভয়াবহ চিত্র। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ৩৪৬ জন মানুষ তথাকথিত সম্মানের নামে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। বিশেষ করে সিন্ধু ও পাঞ্জাব প্রদেশে এই প্রবণতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একুশ শতকে দাঁড়িয়েও পরিবারের নারী ও শিশুদের এভাবে জীবন দিতে হওয়া কেবল মর্মান্তিকই নয়, মানবতার জন্য চরম লজ্জাজনক।