সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব শওকত মাহমুদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রাজধানীর রমনা মডেল থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় গতকাল তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানা এই আদেশ দেন।
এর আগে রোববার বিকেলে রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আদালতে যা হলো
সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ডিবি পুলিশের কড়া পাহারায় একটি মাইক্রোবাসে করে শওকত মাহমুদকে আদালতে আনা হয়। এরপর তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. আখতার মোর্শেদ আসামিকে কারাগারে আটক রাখার পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। তবে প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী জানান, মামলার মূল নথি না থাকায় এদিন রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং রিমান্ড শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করবেন বলে জানা গেছে।
গুরুতর সব অভিযোগ
রিমান্ড আবেদনে পুলিশের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়, শওকত মাহমুদ এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন আসামি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীর সঙ্গে যোগসাজশে লিপ্ত ছিলেন। অভিযোগ করা হয়, তারা দেশের অখণ্ডতা, সংহতি ও জননিরাপত্তা বিপন্ন করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
পুলিশের দাবি, বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে শওকত মাহমুদ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, উচ্চপদস্থ ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপনে সভা-সমাবেশ ও পরামর্শ করে আসছিলেন। আবেদনে আরও বলা হয়, একটি প্রভাবশালী রাষ্ট্রের হয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনায় তিনি জড়িত। কোন কোন দল বা সংগঠনের সঙ্গে তিনি গোপনে শলাপরামর্শ করেছেন, তা উদঘাটনে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
মামলার প্রেক্ষাপট ও এনায়েত করিম প্রসঙ্গ
এই মামলার মূল আসামি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী। মামলার নথি অনুযায়ী, এনায়েত করিম ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং ২০০৪ সালে সেখানকার নাগরিকত্ব পান। অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার মিশনে গত ৬ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে আসেন।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর মিন্টো রোড এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির সময় পুলিশ এনায়েত করিমকে আটক করে। সে সময় তার কাছ থেকে দুটি আইফোন জব্দ করা হয় এবং তিনি তার অবস্থানের কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এরপর রমনা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
এনায়েত করিমকে তিন দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীতে এস এম গোলাম মোস্তফা আজাদ, জাতীয় পার্টির (রওশনপন্থি) মহাসচিব কাজী মো. মামুনুর রশীদ এবং যুব সংহতির নেতা রিফাতুল ইসলাম পাভেলকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়া হয়। সেই ধারাবাহিকতাতেই এবার গ্রেপ্তার হলেন প্রবীণ সাংবাদিক শওকত মাহমুদ।










