কৃষ্ণা বসু, কলকাতা:দীর্ঘ ১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ফের তিলোত্তমায় পা রাখতে চলেছেন ফুটবলের জাদুকর লিয়োনেল মেসি। তবে ২০১১ সালের সেই সফরের সঙ্গে এবারের সফরের রয়েছে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। সেবার তিনি এসেছিলেন শুধুই আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে, আর এবার তিনি আসছেন ‘বিশ্বজয়ী’র মুকুট মাথায় নিয়ে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) গভীর রাতে, অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটায় শনিবার রাত ১টা ৩০ মিনিটে কলকাতায় অবতরণ করবে মেসির বিমান। মাত্র সাড়ে ১২ ঘণ্টার এই ঝটিকা সফরে ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে ইন্টার মায়ামির এই তারকা ফুটবলারের।

বিশ্বজয়ী বেশে লিয়োর প্রত্যাবর্তন
২০১১ সালের ২ সেপ্টেম্বর যুবভারতীতে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে খেলেছিলেন মেসি। তখন তিনি বিশ্বসেরা হলেও বিশ্বকাপের ট্রফি ছিল অধরা। তবে ২০২৫ সালে তিনি যখন দ্বিতীয়বারের মতো কলকাতায় আসছেন, তখন তিনি বিশ্বজয়ী অধিনায়ক। কিছুদিন আগেই ইন্টার মায়ামিকে প্রথমবার এমএলএস কাপ চ্যাম্পিয়ন করে দারুণ ফর্মে রয়েছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই তাকে ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে। শহরজুড়ে তাকে স্বাগত জানাতে বসানো হয়েছে বিশাল সব হোর্ডিং।
ঠাসা কর্মসূচির সময়সূচি
শুক্রবার রাতে পৌঁছানোর পর হোটেলে সামান্য বিশ্রামের সুযোগ পাবেন মেসি। এরপর শনিবার সকাল থেকেই শুরু হবে তার ব্যস্ততা:
সকাল ৯:৩০ – ১০:৩০: ‘মিট অ্যান্ড গ্রিট’ পর্ব।
সকাল ১০:৩০ – ১১:১৫: ভার্চুয়ালি নিজের মূর্তি উন্মোচন করবেন এলএম টেন।
সকাল ১১:১৫: হোটেল থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের উদ্দেশে রওনা।
দুপুর ১২:০০ – ১২:৩০: যুবভারতীতে সেলিব্রিটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচ, সংবর্ধনা এবং সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতা।
অনুষ্ঠান শেষে বিমানবন্দর হয়ে দুপুর ২টায় হায়দরাবাদের উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি।
একমঞ্চে নক্ষত্রপতন
মেসিকে বরণ করে নিতে যুবভারতীতে উপস্থিত থাকবেন একঝাঁক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে মাঠে উপস্থিত হবেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। দুপুর ১২টায় পৌঁছাবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। পেলে, ম্যারাডোনার পর মেসির দ্বিতীয় আগমনে যুবভারতী ফের ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে।
কড়া নিরাপত্তা বলয়
মেসি এবং ভিভিআইপি অতিথিদের আগমন উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে সল্টলেক ও সংলগ্ন এলাকা। নিরাপত্তার মূল দায়িত্বে থাকছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট, সঙ্গে সহায়তা করবে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ।
প্রায় ২০০০ পুলিশকর্মী, র্যাফ এবং বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসাররা মোতায়েন থাকবেন। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে এবং গাড়ি পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে পুলিশ। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে নারাজ প্রশাসন।
শহরের ফুটবলপ্রেমীরা এখন প্রহর গুনছেন তাদের প্রিয় তারকাকে একনজর দেখার জন্য। ২০১১ থেকে ২০২৫—মাঝের এই দীর্ঘ সময় মেসি নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়, আর কলকাতা তৈরি তাকে সেই রাজকীয় সম্মান জানাতে।










