১১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা
এভিয়েশন ডেস্ক: ভারতের বিমানবন্দর অবকাঠামো খাতে নিজেদের একাধিপত্য আরও সুসংহত করতে যাচ্ছে আদানি গ্রুপ। আগামী পাঁচ বছরে ১১ বিলিয়ন ডলারের বিশাল সম্প্রসারণ কৌশলের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের ইজারা দিতে যাওয়া ১১টি বিমানবন্দরের সবকটির জন্য বিড করার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমানে আদানি গ্রুপ তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আদানি এয়ারপোর্ট হোল্ডিংস লিমিটেড’ (AAHL)-এর মাধ্যমে ভারতের বৃহত্তম বিমানবন্দর অবকাঠামো পরিচালক। দেশের মোট যাত্রী চলাচলের প্রায় ২৩ শতাংশ এবং কার্গো পরিবহনের ৩৩ শতাংশই নিয়ন্ত্রিত হয় এই গ্রুপের মাধ্যমে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি আহমেদাবাদ, লখনউ, গুয়াহাটি, তিরুবনন্তপুরম, জয়পুর এবং ম্যাঙ্গালুরুসহ মোট সাতটি বিমানবন্দর পরিচালনা করছে।
আদানি গ্রুপের জন্য চলতি মাসের সবচেয়ে বড় খবর হলো তাদের তৈরি প্রথম স্ক্র্যাচ বিমানবন্দর—নাভি মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। আগামী ২৫ ডিসেম্বর থেকে এই বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।
নির্মাণ ব্যয়: প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯,৬৫০ কোটি রুপি।
ক্ষমতা: প্রথম ধাপে বছরে ২০ মিলিয়ন যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে, যা ভবিষ্যতে ৯০ মিলিয়নে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। মুম্বাইয়ের বর্তমান বিমানবন্দরের ওপর চাপ কমাতে এই নতুন বিমানবন্দরটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ভারতের সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রণালয় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (PPP) মডেলে অমৃতসর এবং বারাণসীসহ ১১টি বিমানবন্দর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুম্বাইয়ে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আদানি এয়ারপোর্টের পরিচালক জিৎ আদানি বলেন, “আমরা এই খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। পরবর্তী দফার নিলামে ১১টি বিমানবন্দরের সবকটির জন্যই আমরা শতভাগ আগ্রাসীভাবে বিড করব।”
ভারত সরকার ২০৪৭ সালের মধ্যে বিমানবন্দরের সংখ্যা ১৬৩টি থেকে বাড়িয়ে ৩৫০-৪০০ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা আদানি গ্রুপের মতো বড় বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছে।
আদানি এয়ারপোর্ট হোল্ডিংস লিমিটেড (AAHL) শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত (IPO) করা বা ডি-মার্জার করার বিষয়ে জিত আদানি জানান, এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা এখনো ঠিক করা হয়নি। ব্যবসাটি বর্তমানে ইতিবাচক ইবিআইটিডিএ (EBITDA) অর্জন করলেও নগদ প্রবাহ (Cash positive) নিশ্চিত করার মতো কিছু মাইলফলক অর্জনের পর আইপিও-র বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ভারতে বিমানযাত্রীর সংখ্যা দ্রুত বাড়লেও (২০২৪ সালে ১৭৪ মিলিয়ন) আদানি গ্রুপ সরাসরি বিমান সংস্থা বা এয়ারলাইন ব্যবসায় নামার কোনো পরিকল্পনা করছে না। জিত আদানির মতে, এই ব্যবসায় লাভের মার্জিন অত্যন্ত কম। তাদের মূল শক্তি হলো মাটির ওপর দীর্ঘমেয়াদী এবং টেকসই অবকাঠামো তৈরি করা এবং সেগুলো দক্ষতার সাথে পরিচালনা করা।
আদানি গ্রুপের এই বিশাল সম্প্রসারণ কি ভারতের বিমান চলাচল ব্যবস্থায় একচেটিয়া প্রভাব তৈরি করবে নাকি সেবার মান বাড়াবে? আপনার মতামত আমাদের জানান।










