Home তথ্য প্রযুক্তি এআই-এর দাপটে কমছে নতুনদের কাজের সুযোগ

এআই-এর দাপটে কমছে নতুনদের কাজের সুযোগ

 

যুক্তরাষ্ট্রে এন্ট্রি-লেভেল চাকরি হ্রাস পেয়েছে ৩৫%

আইটি ডেস্ক: সান ফ্রান্সিসকো যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে আশঙ্কাজনক পরিবর্তনের চিত্র ফুটে উঠেছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত দুই বছরে দেশটিতে ‘এন্ট্রি-লেভেল’ বা নতুনদের জন্য নির্ধারিত চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রায় ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। গবেষকদের মতে, এই পরিস্থিতির পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI (Artificial Intelligence)-এর দ্রুত প্রসার।

শ্রম গবেষণা সংস্থা ‘রেভেলিও ল্যাবস’ (Revelio Labs)-এর এই তথ্য কোম্পানিগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া, স্বয়ংক্রিয়করণ এবং কর্মী প্রশিক্ষণের ধরনে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের সংকট

গ্লোবাল এক্সিকিউটিভ সার্চ ফার্ম ‘কিংসলে গেট’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা উমেশ রামকৃষ্ণান এই পরিস্থিতিকে একটি “অস্তিত্ব রক্ষার সংকট” হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “সামাজিক চুক্তিটাই ছিল এমন—আপনি পড়াশোনা করবেন এবং একটি প্রথম চাকরির মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করবেন। কিন্তু অনেক কোম্পানির ক্ষেত্রে সেই প্রথম ধাপটিই এখন হারিয়ে যাচ্ছে।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, আজকের এন্ট্রি-লেভেল কর্মীরাই আগামীদিনের মধ্যম সারির কর্মকর্তা এবং পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন। যদি এন্ট্রি-লেভেল চাকরিই না থাকে, তবে আগামী ৩-৪ বছর পর অভিজ্ঞ কর্মীর অভাবে কোম্পানিগুলো নেতৃত্ব সংকটে পড়বে।

স্বল্পমেয়াদী লাভ বনাম দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি

বর্তমানে কোম্পানিগুলো AI ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা ও মুনাফা বাড়াতে সক্ষম হলেও, তরুণদের প্রশিক্ষণে তাদের বিনিয়োগ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। রামকৃষ্ণান জানান, “বিনিয়োগের সব অর্থ এখন AI-এর পেছনে যাচ্ছে, কলেজ থেকে পাস করা তরুণদের প্রশিক্ষণের জন্য নয়। সিইও এবং বোর্ড মেম্বাররা বর্তমানের মুনাফা নিয়ে ভাবলেও, ভবিষ্যতের দক্ষ জনবল তৈরি নিয়ে তারা দিশেহারা।”

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের ডাক

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে শিক্ষাব্যবস্থায় ‘আমূল’ পরিবর্তন প্রয়োজন:

বাস্তব অভিজ্ঞতা: বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের প্রথম বর্ষ থেকেই কর্মক্ষেত্রের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন শুরু করতে হবে।

উন্নত প্রশিক্ষণ: গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর তারা যেন ‘এন্ট্রি-লেভেল’ পদের জন্য লড়াই না করে সরাসরি মধ্যম সারির পদের যোগ্য হয়ে ওঠে।

AI শিক্ষা: হাইস্কুল থেকেই শিক্ষার্থীদের AI সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন শুরু করতে হবে।

শিক্ষা ও শিল্পের সমন্বয়: কোম্পানিগুলোকে উচিত শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচ বহন করা এবং বিনিময়ে তাদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া।

নিয়োগকর্তা এবং শিক্ষাবিদগণ যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেন, তবে কেবল ক্যারিয়ারের শুরুটাই কঠিন হবে না, বরং আগামী কয়েক দশকে বিশ্বজুড়ে প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্বের কাঠামোও ভেঙে পড়তে পারে।

এ ধরণের আরও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে ভিজিট করুন www.businesstoday24.com