Home সারাদেশ যশোরে বাদুড়ের মাংস খেয়ে একই পরিবারের ৬ জন হাসপাতালে

যশোরে বাদুড়ের মাংস খেয়ে একই পরিবারের ৬ জন হাসপাতালে

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, যশোর: যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে বাদুড়ের মাংস খাওয়ার পর একই পরিবারের ৬ জন সদস্য রহস্যজনকভাবে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে অসুস্থদের দাবি, এটি কেবল মাংস খাওয়ার কারণে নয় বরং পরিকল্পিত কোনো বিষক্রিয়া বা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড হতে পারে। এই সুযোগে তাদের বাড়ি থেকে মূল্যবান মালামাল লুট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে পরিবারের গৃহকর্ত্রী সখি দাস তার বাবার বাড়ি থেকে প্রায় এক কেজি বাদুড়ের মাংস নিয়ে আসেন। রাতে পরিবারের সবাই মিলে সেই মাংস রান্না করে ভাত খান। রবিবার সকালে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও পরিবারের কেউ ঘুম থেকে না ওঠায় প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। পরে ঘরের ভেতর গিয়ে তাদের অচেতন ও গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়।

অসুস্থরা হলেন: ১. সখি দাস (শুভাস দাসের স্ত্রী) ২. ইন্দ্রজিৎ দাস (ছেলে) ৩. প্রসেনজিৎ দাস (ছেলে) ৪. হৃদয় দাস (ছেলে) ৫. অজয় দাস (আত্মীয়) ৬. রবিন দাস (আত্মীয়)

প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. বিচিত্র মল্লিক জানিয়েছেন, খাদ্যে বিষক্রিয়ার ফলে তারা অসুস্থ হয়ে থাকতে পারেন। তবে প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

অসুস্থ সখি দাস ও পরিবারের অন্য সদস্যরা দাবি করেছেন, তারা কেবল বাদুড়ের মাংস খেয়ে অসুস্থ হননি। তাদের অভিযোগ:

  • কোনো দুষ্কৃতকারী পরিকল্পিতভাবে তাদের খাবারের সাথে নেশাজাতীয় বা ক্ষতিকর কোনো দ্রব্য মিশিয়ে দিয়েছে।
  • তারা যখন অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে ছিলেন, সেই সুযোগে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাদের ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে।

এখন পর্যন্ত স্থানীয় পুলিশ বা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ল্যাব রিপোর্ট বা ফরেনসিক তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। বাদুড়ের মাংস থেকে কোনো জোনোটিক (প্রাণীবাহিত) ভাইরাসের সংক্রমণ কি না, তা নিয়েও স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। মণিরামপুর থানা পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে, তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মামলা বা কাউকে গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি।

পুরো বাহাদুরপুর গ্রাম জুড়ে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা নিয়ে আতঙ্ক ও কৌতূহল বিরাজ করছে।

২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী, বাদুড় বা পাখি হত্যা করলে সর্বোচ্চ এক বছর জেল অথবা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। একই অপরাধ আবার করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের জেল অথবা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

এ ধরণের আরও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে ভিজিট করুন www.businesstoday24.com