ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমজমাট লড়াইয়ের আভাস
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে সারা দেশের নজর এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ-বিজয়নগরের একাংশ) আসনের দিকে।
এই আসনের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও পরিচিত টকশো ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এবং জোটের প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন, যা স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করেছে।
পিতার পথেই হাঁটছেন রুমিন: রুমিন ফারহানার এই লড়াইয়ের পেছনে রয়েছে এক দীর্ঘ আবেগঘন ইতিহাস। তার পিতা প্রখ্যাত ভাষাসৈনিক অলি আহাদ ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘গাভী’ প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন। রুমিন ফারহানার দাবি, সেই নির্বাচনে তার পিতা জয়ী হলেও তৎকালীন সরকার ফলাফল পাল্টে দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে জয়ী ঘোষণা করেছিল। পিতার সেই ‘ছিনতাই হওয়া’ ম্যান্ডেট আর অপূর্ণ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতেই এবার তিনি শক্ত অবস্থান নিয়েছেন।
গত শুক্রবার বিজয়নগরের ইসলামপুর গ্রামে পূর্বপুরুষদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে তিনি তার নির্বাচনী কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন।
দলের সিদ্ধান্ত বনাম তৃণমূলের আবেগ: বিএনপি এই আসনটি তাদের অন্যতম শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবকে ছেড়ে দিয়েছে। জোটের প্রার্থীকে মেনে না নিয়ে রুমিন ফারহানার এই বিদ্রোহী অবস্থানকে কেন্দ্র করে সরাইল-আশুগঞ্জ এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। রুমিন ফারহানার পক্ষে ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন স্থানীয় যুবদল নেতা আলী হোসেন। রুমিনের সঙ্গে রয়েছেন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী, যারা দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে এলাকায় তার সক্রিয় রাজনীতির সাক্ষী।
উপলব্ধি ও লড়াইয়ের ঘোষণা: ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গত ১৭ বছর আমি মানুষের অধিকারের জন্য কথা বলেছি। এই আসনে জোটের প্রার্থী না দেওয়ার জন্য আমার আকুতি ছিল, কিন্তু দল তা শোনেনি। আমার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এলাকার মানুষের দোয়া নিয়ে তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন এবং ভোটের মাধ্যমেই ভোটাররা তাকে করা ‘অসম্মানের’ জবাব দেবেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রুমিন ফারহানার সম্ভাব্য প্রতীক হতে পারে ‘হাঁস’। জোটের ‘খেজুর গাছ’ বনাম রুমিন ফারহানার ব্যক্তি-ইমেজ ও পারিবারিক ঐতিহ্যের এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কার হাসি চওড়া হয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।










