মো:সোহেল রানা, ঠাকুরগাঁও: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোকের ছায়ায় ঢাকা পড়েছে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে তার মৃত্যুর সংবাদ পৌঁছানোর পর থেকেই জেলাজুড়ে এক আবেগঘন ও শোকাতুর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের মাঝেও এই প্রয়াণ গভীর রেখাপাত করেছে।
ভোর থেকেই শহরের রাজনৈতিক পরিবেশ বদলে যেতে শুরু করে। খালেদা জিয়ার মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে ঠাকুরগাঁও জেলা ও উপজেলা বিএনপি কার্যালয়গুলোতে নেমে আসে নিস্তব্ধতা।
শোকের প্রতীক হিসেবে কার্যালয়গুলোতে টাঙানো হয়েছে কালো ব্যানার ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ভিড় করতে থাকেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. পয়গাম আলী অত্যন্ত ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেন: “বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের আজীবন লড়াকু প্রতীক। তার প্রয়াণে বাংলাদেশ আজ একজন সত্যিকারের অভিভাবককে হারালো। এই ক্ষতি অপূরণীয়।”
নেতাকর্মীরা তাকে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে অভিহিত করে জানান, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি ছিলেন অকুতোভয়।
রাজনৈতিক অঙ্গনের বাইরেও সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রিয় নেত্রীকে হারানোর হাহাকার দেখা গেছে। ঠাকুরগাঁওয়ের সিনিয়র আইনজীবী মো. বদিউজ্জামান বাদল চৌধুরী বলেন, “উন্নত চিকিৎসার অভাবে তার এই চলে যাওয়া আমাদের দারুণভাবে ব্যথিত করেছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসার সুযোগ দিলে হয়তো আজ পরিস্থিতি ভিন্ন হতো।”
শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে সাধারণ মানুষকে তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ও দেশের জন্য তার অবদানের কথা আলোচনা করতে দেখা গেছে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সংহতি জানিয়ে ঠাকুরগাঁওয়েও সাত দিনের শোক পালনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে:
- সব দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন।
- বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল।
- শোক র্যালি ও স্মরণ সভা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে দীর্ঘ অসুস্থতার পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশের তিনবারের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তার মৃত্যুতে ঠাকুরগাঁওয়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে।










