হেলথ ডেস্ক: উচ্চ কোলেস্টেরল বা রক্তে চর্বির আধিক্য বর্তমানে হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা এবং পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সামান্য পরিবর্তন এনেই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিশেষ করে প্রতিদিন মাত্র ২০-৩০ গ্রাম আমন বাদাম (কাঠবাদাম) খাওয়া আপনার হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় জাদুর মতো কাজ করতে পারে।
হো চি মিন সিটির ট্যাম আন জেনারেল হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের প্রধান ডা. দাও থি ইয়েন থুই জানান, আমন বাদাম মূলত তিনটি উপায়ে শরীরে কাজ করে:
১. ফাইবার বা আঁশ: আমন বাদামে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে। এটি পরিপাকতন্ত্রে এক ধরণের জেল তৈরি করে যা অন্ত্র থেকে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) শোষণ কমিয়ে দেয় এবং শরীর থেকে তা বের করে দিতে সাহায্য করে। ২. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন-ই: এতে থাকা ভিটামিন-ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ধমনীর প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন কমায়, যা রক্ত চলাচলের পথকে মসৃণ রাখে। ৩. উপকারী ফ্যাট: আমন বাদামের মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তে ভালো কোলেস্টেরলের (HDL) মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে।
কতটুকু এবং কীভাবে খাবেন?
পরিমাণ: দিনে ১৫ থেকে ২০টি বা ২০-৩০ গ্রাম আমন বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
খাওয়ার সময়: দুপুরের খাবারের প্রায় ২ ঘণ্টা আগে স্ন্যাকস হিসেবে অথবা দই বা সালাদের সাথে মিশিয়ে এটি খাওয়া যেতে পারে। এতে পেট ভরা থাকে এবং মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।
সতর্কতা: আমন বাদামে প্রচুর ক্যালরি থাকে। তাই ওজন কমাতে চাইলে বা হার্টের সমস্যা থাকলে পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
শুধুমাত্র বাদাম খেলেই হবে না, এর সাথে প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি, সামুদ্রিক মাছ এবং শস্যদানা সমৃদ্ধ সুষম খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা ও পর্যাপ্ত ঘুম কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আপনার যদি উচ্চ কোলেস্টেরল, অতিরিক্ত ক্লান্তি বা পারিবারিক হৃদরোগের ইতিহাস থাকে, তবে আমন বাদাম শুরু করার পাশাপাশি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া শ্রেয়।










