সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই আলাদা টেলিফোনালাপে ফয়সাল বিন ফারহান দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সৌদি আরবের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে সরাসরি কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে। শনিবার সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক টেলিফোন সংলাপে মিলিত হয়ে দুই দেশের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানান।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই আলাদা টেলিফোনালাপে ফয়সাল বিন ফারহান দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সৌদি আরবের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “সৌদি আরব বিশ্বাস করে, আলোচনার মাধ্যমে দ্বন্দ্বের সমাধান সম্ভব এবং বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দুই দেশেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সৌদি আরব চায়, ভারত ও পাকিস্তান নিজেদের কৌশলগত সম্পর্ক ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিবেচনায় রেখে সামরিক মুখোমুখি অবস্থা থেকে সরে আসুক। এই অঞ্চলে শান্তি নিশ্চিত করা শুধু দুই দেশের নয়, গোটা মুসলিম বিশ্ব ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সৌদি তৎপরতার প্রেক্ষাপট:
সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পাকিস্তান থেকে আসা সমস্ত পণ্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সেইসঙ্গে শিপিং সংক্রান্ত নানা বিধিনিষেধ দুই দেশের বন্দর ও বাণিজ্য কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সীমান্ত অঞ্চলেও সামরিক প্রস্তুতির খবর আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে সরাসরি কূটনৈতিক হস্তক্ষেপকে অনেক বিশ্লেষক একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখছেন। উল্লেখ্য, সৌদি আরবের সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তান—উভয় দেশেরই ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। বিশাল সংখ্যক ভারতীয় ও পাকিস্তানি শ্রমিক সৌদি আরবে কর্মরত এবং রেমিট্যান্সের বড় অংশ এখান থেকেই আসে।
মধ্যস্থতার নতুন দিগন্ত?
বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি আরব একদিকে যেমন ইসলামী বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নেতা, অন্যদিকে অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর কাছে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। ফলে রিয়াদের এমন মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা এই অঞ্চলের সংকট নিরসনে সহায়ক হতে পারে।
তবে এখন পর্যন্ত ভারত বা পাকিস্তানের তরফ থেকে সৌদি আরবের এই ফোনালাপ প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।