Home রাজনীতি আমি ধর্মবিদ্বেষী নই, বরং জামায়াতবিদ্বেষী: অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান

আমি ধর্মবিদ্বেষী নই, বরং জামায়াতবিদ্বেষী: অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান

অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ:বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ স্থগিত হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান জামায়াতে ইসলামীর আমীরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সিলেট-এর ১৯টি সংসদীয় আসনের মধ্যে যেকোন একটিতে জামায়াতের আমীর দাঁড়ালে তিনি নিজেও তাঁর দল থেকে সেই আসনে নির্বাচন করবেন। ফজলুর রহমান উল্লেখ করেন, যদি জামায়াত ১৯টি আসনের মধ্যে একটিতেও জয়লাভ করতে পারে, তাহলে তিনি তাদের “বাপের বেটা” বলে স্বীকার করে নেবেন।

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় বুধবার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত এক গণসংবর্ধনায় অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান এই মন্তব্য করেন।

জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশে ফজলুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে “ভাইয়ে ভাইয়ে দ্বন্দ্ব” এবং “ভারত কর্তৃক সৃষ্ট” বলার মাধ্যমে তারা দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করছে। তিনি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন যে তিনি আমৃত্যু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলে যাবেন এবং এই বিষয়ে কোন আপস করবেন না।

তিনি স্মরণ করেন, যখন জামায়াত “এ দেশে কোন মুক্তিযুদ্ধ হয় নাই”, “মুক্তিযুদ্ধ রাখবে না”, এবং “যারা যুদ্ধ করেছে তারা বেশিরভাগ নাকি হিন্দু, ইন্ডিয়া থেকে এসে যুদ্ধ করেছে” বলে প্রচার করছিল, তখন তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি জামায়াতকে “আল-বদর আর রাজাকারের বাচ্চা” আখ্যা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তাঁর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।

ফজলুর রহমান বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্ত এবং ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জত যাতে বৃথা না যায়, সেজন্য তিনি মুক্তিযুদ্ধের অস্বীকারকারীদের ছাড়বেন না। তাঁর এই অবস্থানের কারণে কিছু মাওলানা যেমন আজহারি, আমির হামজা, আহমাদুল্লাহ তাকে “ফজু পাগলা” বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তিনি স্পষ্ট করেন যে তিনি ধর্মবিদ্বেষী নন, বরং জামায়াতবিদ্বেষী। নিজেকে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী “ইসলাম নয়, তারা জামা-কাপড়ে ইসলাম”।

আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি “ধানের শীষ” প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চান এবং দলের কাছে এই প্রতীক চেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, দল তাকে তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দিলেও তিনি তা মাথা পেতে নিয়েছেন। তবে, তার প্রধান চাওয়া হলো ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা। তিনি জনগণের কাছে অনুরোধ করেন, তারা যেন দলের কাছে ফজলুর রহমান এবং ধানের শীষ প্রতীক চায়।

ফজলুর রহমান উপস্থিত জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, “আপনাদের কী মনে হয়, আমি ফজু পাগলা?” তিনি বলেন, রাজাকারেরা তাঁকে পাগল উপাধি দিয়ে নিজেদের রক্ষা করতে চায় এবং “শুধু আল বদর আর রাজাকারের বাচ্চারা ছাড়া আমাকে কেউ ফজু পাগলা বলে না”।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের মুক্তিযোদ্ধা এবং কয়েক হাজার নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।