Home স্বাস্থ্য নাক দিয়ে মস্তিষ্কে প্রবেশকারী অ্যামিবা: কীভাবে রক্ষা পাবেন?

নাক দিয়ে মস্তিষ্কে প্রবেশকারী অ্যামিবা: কীভাবে রক্ষা পাবেন?

হেলথ ডেস্ক: ভারতের কেরালা রাজ্যে ‘মস্তিষ্ক-খেকো’ অ্যামিবা (Naegleria fowleri) সংক্রমণ বর্তমানে একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, এই অ্যামিবা সংক্রমণে রাজ্যটিতে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং মোট ৬৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসেই ১৯ জন নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।

মস্তিষ্ক-খেকো অ্যামিবা: সংক্রমণ ও লক্ষণসমূহ

Naegleria fowleri একটি এককোষী অণুজীব যা সাধারণত উষ্ণ মিষ্টি জলে (যেমন হ্রদ, পুকুর, নদী) বাস করে। এই অ্যামিবা নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে এবং মস্তিষ্কে পৌঁছায়, যেখানে এটি মেনিনজোএনসেফালাইটিস (PAM) নামক মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে। সংক্রমণের ১ থেকে ৯ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলো দেখা দিতে শুরু করে, যার মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, জ্বর, বমি বমি ভাব, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বিভ্রান্তি, খিঁচুনি এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। যদি সময়মতো চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে ৫ দিনের মধ্যে মৃত্যু ঘটে, এবং মৃত্যুর হার প্রায় ৯৭%।

কেরালায় সংক্রমণের কারণ ও প্রতিরোধ

কেরালার উষ্ণ জলবায়ু, দূষিত জলাশয় এবং অপর্যাপ্ত ক্লোরিনেশন এই সংক্রমণের বৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই অ্যামিবা ভাইরাসের মতো এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়ায় না; এটি শুধুমাত্র নাকে প্রবেশ করা দূষিত জলের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়।

সতর্কতা হিসেবে, সাঁতার কাটার সময় নাকের ক্লিপ ব্যবহার করা, নাক ধোয়ার জন্য ফুটানো বা জীবাণুমুক্ত পানি ব্যবহার করা এবং দূষিত জলাশয়ে স্নান বা সাঁতার এড়িয়ে চলা উচিত। কেরালা সরকার ইতোমধ্যে পুকুরগুলোর পানি পরীক্ষা ও ক্লোরিনেশন শুরু করেছে।

বাংলাদেশে সতর্কতা

বাংলাদেশের জলবায়ু ও পরিবেশগত পরিস্থিতি কেরালার সঙ্গে কিছুটা মিল রয়েছে। তাহলে, এই ধরনের সংক্রমণ বাংলাদেশেও ঘটতে পারে। তাই, স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও জনগণকে সতর্ক থাকা এবং প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

সর্বোপরি, মস্তিষ্ক-খেকো অ্যামিবা একটি বিরল হলেও মারাত্মক সংক্রমণ। সতর্কতা ও সচেতনতা এর প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।