বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা যখন চরমে, তখন পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও টিভি সঞ্চালক মুহাম্মদ মালিক এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে আলোড়ন তুলেছেন। তাঁর দাবি, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক ভয়াবহ হামলার পর ভারত পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরে সামরিক হামলা চালাতে পারে। তবে সেই হামলা হবে আইপিএল শেষ হওয়ার পরেই।
এক টেলিভিশন আলোচনায় মালিক বলেন, “আজ ভারতের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা বলেছে, ভারত হামলা করবে— কিন্তু তা ২৫ মে’র পর। কারণ ওই দিন শেষ হচ্ছে আইপিএল, যা কয়েক হাজার কোটি রুপির প্রকল্প। তাই তখনই তারা ঝুঁকি নিতে চাইবে।”
মুহাম্মদ মালিক-এর এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়, যখন ভারতের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকেছে। নয়াদিল্লি সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করলেও, ইসলামাবাদ এই অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারারও সতর্ক করে দিয়েছেন যে,”কাশ্মীর হামলাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে ভারত হয়তো একটি ‘ফলস ফ্ল্যাগ’ অপারেশনের পরিকল্পনা করছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “পাকিস্তান যে কোনো আগ্রাসনের জবাব অত্যন্ত শক্তভাবে দেবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, মালিকের বক্তব্যে যে ইঙ্গিত রয়েছে তা একদিকে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনই বাস্তবভিত্তিকও। আইপিএল ভারতের সবচেয়ে লাভজনক ক্রীড়া টুর্নামেন্ট, যেখানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ জড়িত। এমন সময়ে কোনো সামরিক সংঘর্ষ শুরু হলে তা ভারতের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা দিতে পারে।
ইতোমধ্যে পাকিস্তান তার সামরিক বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে রেখেছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, দেশের ভূখণ্ডের নিরাপত্তায় কোনো আপস করা হবে না। কূটনৈতিক পর্যায়েও পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তান-ভারত সম্পর্ক বহুবার উত্তেজনার মধ্য দিয়ে গেছে। তবে বর্তমানে গণমাধ্যম, কূটনীতি ও সামরিক পর্যায়ে যে আলোচনার ঢেউ উঠেছে, তা ইঙ্গিত দেয় এটি নিছক কথার লড়াই নয়, বরং বাস্তব হুমকি হতে পারে।
এখন আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি স্থির আইপিএলের সমাপ্তির পরের সময়ের দিকে, যেখানে খেলাধুলার উত্তেজনা হয়তো রূপ নিতে পারে যুদ্ধের অগ্নিসংযোগে।