Home আকাশ পথ আকাশযাত্রার ভয় আর এক গোপন বার্তার গল্প

আকাশযাত্রার ভয় আর এক গোপন বার্তার গল্প

এভিয়েশন ডেস্ক: বিমান ভ্রমণ মানেই অনেকের কাছে স্বপ্নের মতো অভিজ্ঞতা। আবার অনেকের জন্য এটি ভয়েরও কারণ। কিন্তু যারা নিয়মিত আকাশপথে চলাফেরা করেন, বিশেষত কেবিন ক্রু, তাদের কাছে ভ্রমণ প্রায় দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত হয়। তবুও এক মুহূর্তে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা তাদের মনে চিরস্থায়ী দাগ কেটে যায়। ঠিক তেমনি এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট রাকেল ভিনগার্ড।
শৈশবের স্বপ্ন

রাকেলের ছোটবেলা থেকেই ভ্রমণের প্রতি এক বিশেষ আকর্ষণ ছিল। নিউইয়র্ক কিংবা প্যারিসের মতো শহরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। স্কুল শেষ করার পর মা পরামর্শ দিয়েছিলেন এমন একটি পেশায় যেতে, যেখানে ভ্রমণের সুযোগ থাকবে। দ্বিধা না করে রাকেল বেছে নেন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের চাকরি। যাত্রীদের সেবা দেওয়া আর আকাশ পথে নতুন জায়গা দেখা—দুটোই তার হৃদয়ের কাছাকাছি ছিল।

প্রশিক্ষণ শেষ করার পর খুব দ্রুতই তিনি অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। কয়েক বছরের মধ্যেই তার কর্মজীবন হয়ে ওঠে সফল। তবে ৫০০তম ফ্লাইটের দিন এক অস্বাভাবিক ঘটনা তার জীবনকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করে।

অস্বস্তির সকাল

সেদিন সকালে রাকেল ঘুম থেকে উঠেই অদ্ভুত এক অস্বস্তি অনুভব করলেন। যদিও প্রতিবার উড়ানের আগে কিছুটা নার্ভাসনেস কাজ করত, কিন্তু এবার ভেতরে এক অচেনা অস্বস্তি জেগে উঠেছিল। নিজের মধ্যে শক্তি সঞ্চয় করে তিনি প্রস্তুত হলেন।

কর্মস্থলে পৌঁছেই সহকর্মীরা তাকে অভিনন্দন জানালেন। ৫০০তম ফ্লাইটের মতো বড় অর্জনের জন্য দলের সবার শুভেচ্ছা তাকে কিছুটা হালকা করলেও অস্বস্তি একেবারেই দূর হয়নি।

যাত্রা শুরু

সাক্রামেন্টো থেকে ডেট্রয়েটের চার ঘণ্টার ফ্লাইট। এই রুট তিনি একাধিকবার করেছেন। তবুও বোর্ডিংয়ের ব্যস্ততা আর যাত্রীদের সিটে বসানো—সবকিছু মিলিয়ে মনে হচ্ছিল কাজটা যেন সহজ হবে না।

আসন বেল্ট বাঁধার পরপরই শুরু হলো টার্বুলেন্স। অনেকে ভীত হয়ে পড়লেন। রাকেল সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেন তাদের আশ্বস্ত করতে। এ সময় তিনি লক্ষ্য করলেন, এক তরুণী যাত্রী অস্বাভাবিকভাবে অস্থির হয়ে উঠেছেন।

নার্ভাস এক যাত্রী

তরুণীকে দেখে মনে হচ্ছিল কেউ যেন তাকে নজরে রেখেছে। রাকেল শান্তভাবে তার পাশে দাঁড়িয়ে খোঁজ নিলেন। তিনি বললেন, সব ঠিক আছে। কিন্তু চোখেমুখে ভয় আর অস্থিরতা স্পষ্ট ছিল। রাকেল তাকে সিট আরামদায়কভাবে ঠিক করে দিয়ে প্রতিশ্রুতি দিলেন, শিগগিরই পানীয় পরিবেশন করবেন।

রহস্যময় নোট

ড্রিঙ্কস কার্ট নিয়ে যখন রাকেল এগোলেন, তরুণী প্রথমে কফি চাইলেন। কিন্তু হঠাৎ মত বদলে দুধ চাইতে গিয়ে হাতে গুঁজে দিলেন এক কুঁচকানো কাগজের টুকরো। আতঙ্কিত চোখে তাকিয়ে যেন ইঙ্গিত দিলেন—এই নোটটাই সব বলবে।

রাকেলের বুক ধকধক করতে লাগল। এর আগে তিনি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হননি। সাধারণ যাত্রীর সেবা দেওয়ার চেনা কাজটা হঠাৎই এক রহস্যময় ঘটনার দিকে মোড় নিল।

কাগজের ভাঁজে কী লেখা ছিল? কোন বিপদের আশঙ্কা লুকিয়ে ছিল সেখানে? রাকেলের মনে তখন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল—এই ফ্লাইট কি সত্যিই নিরাপদ?