Home অন্যান্য বিপ্লব-পরবর্তী ইরানে নারী জাগরণ ও ঈর্ষণীয় সাফল্য

বিপ্লব-পরবর্তী ইরানে নারী জাগরণ ও ঈর্ষণীয় সাফল্য

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:

 ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর ইরানের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান অংশীদার হলেন ইরানের নারীরা। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আধুনিক শিক্ষার এক অনন্য সমন্বয়ে ইরানের নারীরা আজ বিজ্ঞান, চিকিৎসা এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করেছেন।

শিক্ষা ক্ষেত্রে নীরব বিপ্লব বিপ্লব-পরবর্তী ইরানে নারী শিক্ষার হার যে হারে বেড়েছে, তা অনেক উন্নত দেশের জন্যও উদাহরণ। পরিসংখ্যানে দেখা যায়:

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ: বর্তমানে ইরানের মোট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রায় ৬০ শতাংশই নারী

মেডিক্যাল শিক্ষা: চিকিৎসা বিজ্ঞানে ইরানি নারীদের অগ্রগতি সবচেয়ে বেশি বিস্ময়কর। বর্তমানে ইরানে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী, যা স্বাস্থ্য খাতে তাদের বিশাল প্রভাবের প্রমাণ দেয়।

সাক্ষরতার হার: বিপ্লবের আগে যেখানে গ্রামীণ ও শহরভেদে নারী শিক্ষার ব্যাপক বৈষম্য ছিল, বর্তমানে তা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদান ইরানি নারীরা কেবল সাধারণ শিক্ষায় সীমাবদ্ধ নন, তারা স্টেম (STEM – Science, Technology, Engineering, Mathematics) সেক্টরেও অভাবনীয় সাফল্য দেখাচ্ছেন। ন্যানো-টেকনোলজি, মহাকাশ গবেষণা এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানের মতো জটিল বিষয়েও ইরানি নারী বিজ্ঞানীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান ইরানের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নারীরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। তারা কেবল গৃহিণী হিসেবে নয়, বরং দক্ষ পেশাজীবী, লেখক, পরিচালক এবং খেলোয়াড় হিসেবেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাচ্ছেন। ইরানি সিনেমা থেকে শুরু করে অলিম্পিকের মঞ্চ পর্যন্ত নারীদের এই জয়যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। তাদের এই অগ্রগতির মূলে রয়েছে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভেতর থেকে পাওয়া শিক্ষার সুযোগ এবং সামাজিক নিরাপত্তা।

উপসংহার ইরানি নারীদের এই সাফল্য প্রমাণ করে যে, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা বজায় রেখেও আধুনিক বিশ্বে বিজ্ঞান ও শিক্ষায় সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছানো সম্ভব। মেডিক্যাল ও উচ্চশিক্ষায় তাদের এই বিপুল অংশগ্রহণ ইরানের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরও সমৃদ্ধ করবে।