Home First Lead চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিচালনায় আসছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিচালনায় আসছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) আগামী সোমবার থেকে পরিচালিত হবে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে। স্থায়ী অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ছয় মাসের জন্য নৌবাহিনী এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে।

বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন। আগামী ৬ জুলাই বর্তমান অপারেটর সাইফপাওয়ারটেক-এর সাথে চুক্তি শেষ হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষের।

উপদেষ্টা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে এবং আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে গতি আনতে এনসিটির সাময়িক ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা আনতে সরকারের পক্ষ থেকে নৌবাহিনীকে এই দায়িত্ব প্রদানের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে স্থায়ী অপারেটর নিয়োগের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তবে স্থায়ী অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ছয় মাসের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে টার্মিনালে যারা কাজ করছেন তাদের চাকরির কোনো ক্ষতি হবে না। বরং নৌবাহিনী প্রয়োজনে পূর্বে টার্মিনাল পরিচালনায় সম্পৃক্ত অভিজ্ঞ জনবল ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তা নিতে পারবে।

সরকার দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে বিদেশি কোনো কোম্পানির হাতে বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেবে না জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এখন পর্যন্ত বিদেশি কোনো কোম্পানির সঙ্গে এনসিটি পরিচালনা বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো চুক্তি হয়নি। দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ডসহ কিছু বৈশ্বিক সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা চলছে মাত্র। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষই সার্বিক নিয়ন্ত্রণ ও মালিকানা সংরক্ষণ করবে। এসব প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের জন্য চুক্তিভিত্তিক অপারেটরের ভূমিকায় কাজ করবে, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিকমানের কার্যক্রম নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

বৈঠকে জানানো হয়, বিশ্বের অনেক আধুনিক বন্দর যেমন ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বন্দরগুলো বৈশ্বিক অপারেটরদের পরিচালনায় রয়েছে এবং এসব বন্দরে দক্ষতা, গতি ও আধুনিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশও সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে চায়।

উপদেষ্টা আরও বলেন, এনসিটি পরিচালনায় দক্ষ অপারেটর নিয়োগ হলে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের সময় কমে আসবে, পণ্য পরিবহনে খরচ হ্রাস পাবে, বড় বড় আন্তর্জাতিক জাহাজ ভিড়তে পারবে এবং নতুন নতুন নৌ রুট চালু হবে। এতে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ হাজার টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং থেকে তা ছয় হাজারে উন্নীত হবে। বার্ষিক গড় কনটেইনার হ্যান্ডলিং প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে প্রায় পনের থেকে বিশ শতাংশ।

 তিনি বলেন, সরকারের আগ্রহ হলো দেশীয় সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছানো। সেই লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। বন্দরের উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান রক্ষায় সরকারের অঙ্গীকার রয়েছে।

এ সময় উপদেষ্টা আরও জানান, বর্তমানে সাইফ পাওয়ারটেকের সঙ্গে যেসব চুক্তি রয়েছে, তা অপরিবর্তিত থাকবে। বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।