শিপিং ডেস্ক: পাকিস্তানের করাচিতে হাচিসন পোর্টস টার্মিনালে নোঙর করেছে দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ কনটেইনার জাহাজ—৪০০ মিটার দীর্ঘ “এমএসসি মিকল”। ভূমধ্যসাগরীয় শিপিং কোম্পানি (MSC) পরিচালিত এই জাহাজটির ধারণক্ষমতা ২৪ হাজারেরও বেশি কনটেইনার (TEU), যা পাকিস্তানের সামুদ্রিক খাতে এক নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
হাচিসন পোর্টস পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই জাহাজ নোঙর করার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো—দেশটি এখন এমন পরবর্তী প্রজন্মের বৃহৎ জাহাজ গ্রহণের সক্ষমতা অর্জন করেছে, যেগুলো এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে বৈশ্বিক বাণিজ্য রুটে প্রধান ভূমিকা রাখে।
সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়, “পাকিস্তানের একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর হাচিসন পোর্টসে নোঙর করেছে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জাহাজ। ৪০০ মিটার দীর্ঘ ও ২৪,০৭০ টিইইউ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এমএসসি মিকল জাহাজটি বিশ্বের অন্যতম আধুনিক কনটেইনার জাহাজ। এটি পাকিস্তানের সামুদ্রিক শিল্পে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক।”
হাচিসন পোর্টসের কর্মকর্তারা জানান, এই ঘটনাটি পাকিস্তানের সামুদ্রিক খাতে আন্তর্জাতিক আস্থা বৃদ্ধির স্পষ্ট ইঙ্গিত। পাশাপাশি, এটি দেশটির বিশ্বমানের লজিস্টিক সক্ষমতার প্রতিফলন। বড় আকারের জাহাজ নোঙরের সুবিধা পেলে পরিবহন ব্যয় কমবে, রপ্তানি প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং আমদানি আরও সাশ্রয়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
করাচি ও পাশের পোর্ট কাসিম—দুটি প্রধান বন্দরই এতদিন গভীর পানির অভাবে ছোট আকারের জাহাজ পরিচালনা করত। এতে পাকিস্তান আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছিল ভারতের মুণদ্রা বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের জেবেল আলি বন্দরগুলোর তুলনায়। ২০১৮ সালে হাচিসন পোর্টস পাকিস্তান চালু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো দেশটিতে ৪০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ গ্রহণের অবকাঠামো তৈরি হয়।
করাচির কিমারি এলাকায় অবস্থিত এই টার্মিনালটি হংকং-ভিত্তিক হাচিসন পোর্টস গ্রুপের অংশ, যারা বর্তমানে বিশ্বের ২৪টি দেশে ৫৩টি বন্দর পরিচালনা করছে। পাকিস্তান এখন রপ্তানি বৃদ্ধি, লজিস্টিক সহজীকরণ এবং চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (CPEC)–সংযুক্ত বাণিজ্যপথগুলোকে আরও কার্যকর করতে কাজ করছে।
শিল্প বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন আল্ট্রা-লার্জ জাহাজের আগমন শুধু পরিবহন খরচই কমাবে না, বরং বৈশ্বিক প্রধান শিপিং লাইনগুলোকে পাকিস্তানের বন্দরে সরাসরি রুট চালু করতে উৎসাহিত করবে—ফলে মধ্যপ্রাচ্যের ফিডার রুটের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে।