Home আকাশ পথ বিধ্বস্ত বিমানে থাকার কথা ছিল, ফ্লাইট মিস করেই ফিরে পেলেন জীবন

বিধ্বস্ত বিমানে থাকার কথা ছিল, ফ্লাইট মিস করেই ফিরে পেলেন জীবন

ছবি: এআই

এভিয়েশন ডেস্ক: আহমেদাবাদের আকাশে দুপুরটা আর কোনোদিন স্বাভাবিক হয়ে উঠবে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটল এমন এক ভয়ংকর ঘটনা, যা কাঁপিয়ে দিল গোটা দেশকে। লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান এআই-১৭১ বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারালেন অন্তত ২৪১ জন যাত্রী। কিন্তু এ দিনই এক নারীর জীবন যেন নতুনভাবে শুরু হল মাত্র ১০ মিনিট দেরি করে বিমানটি না ধরার কারণে।

ভূমি চৌহান। সেই নাম, যার হৃদস্পন্দন এখনও স্বাভাবিক হয়নি। ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকার কারণে বিমানবন্দরে পৌঁছাতেই দেরি হয়ে গিয়েছিল। বোর্ডিংয়ের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ফ্লাইট আর ধরা যাবে না। হতাশ হয়ে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসার সময় বুঝতেই পারেননি, জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার তিনি পেয়ে গিয়েছেন, একটি অতিমূল্যবান জীবন।

মাত্র ১০ মিনিট। এই ছোট্ট সময়ের ব্যবধান বদলে দিল তাঁর নিয়তি। ভূমি বলেন, “আমি কাঁপছি, আমার মাথা কাজ করছে না। কী বলব বুঝতে পারছি না।” লন্ডনে অবস্থানরত স্বামীর কাছে ফেরার কথা ছিল তাঁর। ভারতে এসেছিলেন ছুটি কাটাতে। দীর্ঘ দু’বছর পর মাতৃভূমির মাটিতে এসেছিলেন। আর আজ, তাঁর মনে হচ্ছে এই ফেরা যেন ছিল কোনও অদৃশ্য শক্তির পরিকল্পনা।

ঘটনার বর্ণনায় জানা যায়, বিমানটি আহমেদাবাদ থেকে উড়েই কয়েক মিনিটের মধ্যে মাত্র ৬২৫ ফুট উচ্চতায় পৌঁছায়। সেখান থেকেই শুরু হয় বিপর্যয়ের সূচনা। হঠাৎ করেই নেমে আসতে শুরু করে বিমানটি। ধাক্কা খায় একটি মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেল ভবনের ছাদে। বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। ছিন্নভিন্ন দেহ, পোড়া বস্তুপুঞ্জ, ধোঁয়া আর কান্নার শব্দে ভারী হয়ে ওঠে বাতাস।

দিল্লি থেকে আসা বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানটি ১২ বছর পুরনো। অথচ এতদিন কোনও বড় ধরনের দুর্ঘটনার রেকর্ড ছিল না এই বিমানের। বৃহস্পতিবারের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এক লহমায় সব ইতিহাসকে পেছনে ফেলে দিল।

টাটা গ্রুপ ঘোষণা করেছে, প্রতিটি নিহত যাত্রীর পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মূল্য কি কখনও পূরণ হতে পারে?

ভূমি চৌহানের কাছে আজকের দিন শুধু একটা তারিখ নয়, এটা তাঁর দ্বিতীয় জন্মদিন। গণপতি বাপ্পার নাম নিয়ে তিনি বলেন, “ভগবানই আমাকে বাঁচিয়েছেন। আমি জানি না, এই কৃতজ্ঞতা কীভাবে প্রকাশ করব।”

একদিকে ২৪১টি পরিবারে আজ শোক আর কান্নার ছায়া, অন্যদিকে একজন ভূমি চৌহান যেন হয়ে উঠেছেন জীবনের নতুন প্রতীক। শুধুমাত্র ১০ মিনিট দেরি কখনও কখনও সময় এমন এক অজানা চিঠি লেখে, যার ভাষা ব্যথায় নয়, বিস্ময়ে বোঝা যায়।


🔁 প্রতিবেদনটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন
📰 আরও এমন প্রতিবেদন পেতে ভিজিট করুন BusinessToday24.com