★ সাত বছরের গবেষণার ফসল, এক মাস ধরে চলছে ক্রু-সহ পরীক্ষামূলক উড়ান
★ এক আসন ও দুই আসনের দুটি মডেল, সর্বোচ্চ বহনক্ষমতা ২২০ কেজি
★ বৈদ্যুতিক প্রযুক্তিতে তৈরি, ভবিষ্যতে হবে এয়ার ট্যাক্সি হিসেবেও ব্যবহারযোগ্য
★ মাত্র ৩০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণে চালানো সম্ভব, রয়েছে জয়স্টিক সুবিধা
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:
তুরস্কে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি প্রথম উড়ন্ত গাড়ি এয়ারকার সফলভাবে মানবচালিত উড়ান শুরু করেছে। কোজায়েলি প্রদেশের বিলিশিম ভাদিসি (তথ্যপ্রযুক্তি উপত্যকা) এলাকায় গড়ে ওঠা এই প্রকল্প ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছে। প্রকল্পটির নির্মাতা এরায় আলতুনবোজার জানান, তারা এখন বিশ্বের মাত্র পাঁচটি কোম্পানির একটি যারা মানবচালিত উড়ন্ত গাড়ির প্রযুক্তিতে কাজ করছে।
এক সাক্ষাৎকারে আলতুনবোজার বলেন, “আমরা এক মাস আগে মানবচালিত উড়ান শুরু করেছি। পেছনে যে যানটি দেখছেন, সেটিই এয়ারকারের পূর্ণাঙ্গ প্রোটোটাইপ।”
তিনি জানান, প্রায় সাত বছরের গবেষণা ও উন্নয়নের ফল এয়ারকার। শেষ চার বছর খুবই ব্যস্ত সময় গেছে। প্রথমদিকে ধারণা বিকাশ এবং বাজার প্রস্তুতির দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়। এখন দুই আসনের মডেলে সফলভাবে উড়ান চালানো হচ্ছে।
এয়ারকারের দুইটি মডেল রয়েছে এক আসনের এবং দুই আসনের। এর মধ্যে দুই আসনের মডেলটি সর্বোচ্চ ২০০-২২০ কেজি পর্যন্ত বহন করতে পারে এবং লক্ষ্য করা হচ্ছে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে যাত্রা সম্পন্ন করা। এই দূরত্বে পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা এখনো হয়নি, তবে শিগগিরই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুরোপুরি বৈদ্যুতিক এবং আংশিক স্বয়ংক্রিয় এই উড়ন্ত যানটিতে পাইলট থাকতেই হবে — এমন বিধিনিষেধ এখনও রয়েছে। তাই যানটিতে জয়স্টিক রয়েছে এবং মাত্র ৩০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণে চালানো সম্ভব হবে। প্রাথমিকভাবে এটি ব্যক্তিগত বিক্রির জন্য বাজারে আসবে, পরবর্তীতে এয়ার ট্যাক্সি হিসেবেও ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।
আলতুনবোজার বলেন, “আমরা চাইলে এখনই জ্বালানিভিত্তিক প্রযুক্তিতে গিয়ে রেঞ্জ ১৫০ কিলোমিটারে উন্নীত করতে পারি, তবে বিশ্ব যখন বৈদ্যুতিক শক্তির দিকে যাচ্ছে, তখন সঠিক সময়ে সঠিক প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।”
ইস্তানবুলের বসফরাস উপকূল এয়ারকার ব্যবহারের জন্য অত্যন্ত উপযোগী উল্লেখ করে তিনি জানান, কম উচ্চতায় উড়ান দিয়েই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াত সম্ভব। এমনকি প্রিন্স দ্বীপপুঞ্জেও যাত্রী ও কার্গো পরিবহন সহজ হবে।
বিশ্বব্যাপী এয়ার ট্যাক্সি ও উড়ন্ত গাড়ির প্রযুক্তি এখনও নানা বিধিনিষেধের মুখে থাকলেও এটি ভবিষ্যতের অন্যতম সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছর প্যারিস অলিম্পিকেও ভোলোকপ্টার নামের একটি কোম্পানি এই প্রযুক্তির জন্য অনুমোদন পায়নি। তবে এ বছরের সাংহাই অটো শোতে উড়ন্ত গাড়ি ও ভিটিওএল (VTOL) প্রযুক্তি বেশ নজর কেড়েছে।
এয়ারকারের সাফল্যের মাধ্যমে তুরস্ক নিজেকে ভবিষ্যতের যাতায়াত প্রযুক্তির অন্যতম পথপ্রদর্শক হিসেবে প্রমাণ করতে চায়।