বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: বহুল আলোচিত এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলম (এস আলম) ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের দেশ ও বিদেশে থাকা বিপুল সম্পদের বিষয়ে একের পর এক আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে আদালত। সম্প্রতি রাজধানীর একটি আদালত তাদের বিদেশে থাকা কিছু সম্পত্তির বিষয়ে তদন্তের অংশ হিসেবে জব্দ (ক্রোক) ও হিসাব ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত। এ আদেশে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এরই অংশ হিসেবে তাদের নামে থাকা বিদেশি সম্পত্তি ও আর্থিক হিসাব তদন্তসাপেক্ষে অবরুদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়।
এর আগে দেশেই এস আলম ও তার পরিবারের নামে থাকা ৬৮টি ব্যাংক হিসাব, ১৬টি স্থাবর সম্পত্তি, ২০০ একরেরও বেশি জমি এবং প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার শেয়ার ফ্রিজ ও ক্রোকের নির্দেশ দেয় আদালত। এসব আদেশের আওতায় চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত জমি, কোম্পানির শেয়ার ও ব্যাংক হিসাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন গত এক দশকে বিদেশে—বিশেষ করে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস ও সাইপ্রাসে—বিভিন্ন নামে প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব অর্থের উৎস হিসেবে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থকেই দায়ী করেছে সংস্থাটি।
আদালতের আদেশে বলা হয়, তদন্তাধীন এই অভিযোগগুলোর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এবং সম্পদের গায়েব বা স্থানান্তর ঠেকাতে তাদের বিদেশি সম্পদও এখন নজরদারির আওতায় আনতে হবে।
দুদকের আইনজীবী জানান, “এস আলম গোষ্ঠী শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরেও বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন, যার উৎস যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেননি। তাই তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নিতে এই পদক্ষেপ জরুরি।”
অন্যদিকে এস আলম গ্রুপের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে তাদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র দাবি করেছে, “এস আলম পরিবার বৈধ পথে সম্পদ গড়ে তুলেছে এবং আইনি লড়াইয়ে তারা পূর্ণ সহযোগিতা করবে।”
এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্ধারিত রয়েছে।
প্রতিবেদন: বিজনেসটুডে২৪ | আদালত ও দুর্নীতি অনুসন্ধান বিভাগ
💬 মতামত দিন | শেয়ার করুন | আপডেট পেতে ফলো করুন বিজনেসটুডে২৪