বিজেনসটুডে২৪ ডেস্ক:
চলতি ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে চীনের কয়লা আমদানি হ্রাসের কারণে বৈশ্বিক সমুদ্রপথে কয়লা বাণিজ্যে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। আন্তর্জাতিক শিপ ব্রোকার প্রতিষ্ঠান বানচেরো কস্তা জানায়, জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়কালে বিশ্বে সমুদ্রপথে কয়লা পরিবহন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৭ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৭ মিলিয়ন টনে। এই প্রবণতা ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধির সম্পূর্ণ বিপরীত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের শীর্ষ কয়লা রপ্তানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা রপ্তানি ১০ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ১১৪.৫ মিলিয়ন টনে নেমে এসেছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে রপ্তানি কমেছে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, রাশিয়া থেকে ৩ দশমিক ২ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ এবং কলম্বিয়া থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ।
তবে, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মোজাম্বিক থেকে কয়লা রপ্তানিতে কিছুটা ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ এবং মোজাম্বিক থেকে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় কয়লা আমদানিকারক চীন জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ৮৭.৪ মিলিয়ন টন কয়লা আমদানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৩ শতাংশ কম।
চীনের পর ভারতের আমদানি ১০ দশমিক ১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩.৯ মিলিয়ন টনে। জাপানের আমদানি সামান্য বেড়ে ৩৯.৪ মিলিয়ন টন হয়েছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে ২০ শতাংশ কমে ২৩.৮ মিলিয়ন টনে নেমেছে।
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে কয়লা আমদানি বেড়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ভিয়েতনামে বেড়েছে ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ।
চীনের কয়লা আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস এখনো ইন্দোনেশিয়া, যার শেয়ার ৫৫ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি ১১ দশমিক ৩ শতাংশ কমে ৪৮.৫ মিলিয়ন টনে নেমেছে।
অস্ট্রেলিয়া এখন দ্বিতীয় বৃহত্তম সরবরাহকারী, ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ শেয়ারে ১৫.৬ মিলিয়ন টন কয়লা সরবরাহ করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ কম। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া, যেখান থেকে ১২.১ মিলিয়ন টন কয়লা এসেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে কানাডা থেকে চীনে কয়লা রপ্তানি ৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৩.৫ মিলিয়ন টনে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকেও আমদানি বেড়েছে ১০ শতাংশ, যা চমকপ্রদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের কয়লা আমদানি হ্রাস মূলত অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং কিছু শিল্প খাতের ধীরগতির কারণে হয়েছে। তবে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে হতে পারে গভীর ও ব্যাপক।