আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে জান্তা সরকারের একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে কারেনি ন্যাশনালিটিস ডিফেন্স ফোর্স। বৃহস্পতিবার কারেনি প্রতিরোধ বাহিনীর উপপ্রধান মাউই সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। ঘটনাটি ঘটেছে কায়া রাজ্যের হপাসাওং শহরে, যেখানে জান্তা বাহিনীর ঘাঁটির ওপর চালানো এক অভিযানের সময় এই বিমানটি গুলি করে নামানো হয়েছে।
ডেপুটি কমান্ডার মাউই তার সামাজিক মাধ্যমে দুর্ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, প্রতিরোধ যোদ্ধারা ভূপাতিত যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ ঘিরে উল্লাস করছে এবং ধ্বংসে অংশ নেওয়া যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানাচ্ছে।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে হপাসাওং শহরে কারেনি বাহিনীর যোদ্ধারা জান্তা সরকারের পদাতিক ব্যাটালিয়ন ১৩৪ এবং ১৩৫ নম্বর সদর দপ্তরে হামলা চালায়। সরকারি বাহিনীকে আকাশ থেকে সহায়তা করছিল চীনে তৈরি ‘এফটিসি-২০০০জি’ মডেলের একটি যুদ্ধবিমান। এই বিমানটিই গুলি করে নামানো হয়েছে বলে প্রতিরোধ যোদ্ধারা দাবি করেছে।
বিমানটি রাজধানী নেপিদো থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরে নিখোঁজ হয়েছে বলে জান্তা সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। তবে সরকার পক্ষ এই ঘটনার জন্য যান্ত্রিক ত্রুটি বা প্রতিকূল আবহাওয়াকে দায়ী করেছে।
চীনে তৈরি এই যুদ্ধবিমানের দাম প্রায় সাড়ে আট মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মিয়ানমার সরকার চীন থেকে এই মডেলের ছয়টি যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করেছিল। এসব বিমান বর্তমানে দেশের ভেতরে প্রতিরোধ আন্দোলন দমন ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইরাবতির খবরে আরও বলা হয়, হামলার সময় প্রতিরোধ যোদ্ধারা ব্যাটালিয়ন ১৩৪ দখল করে এবং সেখানে অবস্থানরত কয়েক ডজন সরকারি সেনা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আটক করে। অস্ত্র ও গোলাবারুদের একটি বড় মজুতও জব্দ করা হয়েছে বলে দাবিও করা হয়। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কারেনি প্রতিরোধ বাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়নি।
এর আগে গত ১০ জুন সাগাইং অঞ্চলে পিপলস লিবারেশন আর্মি নামে একটি আরেক প্রতিরোধ গোষ্ঠী জান্তা সরকারের একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছিল। একাধিক এলাকায় বিদ্রোহীদের হাতে জান্তা বাহিনীর বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মিয়ানমারে সামরিক শাসনের অবনত অবস্থা স্পষ্ট করছে।