Home আকাশ পথ হংকংয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, সাগরে পড়ল কার্গো প্লেন

হংকংয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, সাগরে পড়ল কার্গো প্লেন

সংগৃহীত ছবি
এভিয়েশন ডেস্ক: হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ এক দুর্ঘটনায় এমিরেটসের মালবাহী একটি কার্গো প্লেন রানওয়ে থেকে ছিটকে সোজা সাগরে পড়ে গেছে। এতে বিমানবন্দরের দুইজন কর্মী মারা গেছেন এবং বিমানে থাকা চারজন ক্রু সদস্য আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

বিবিসি, রয়টার্স ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, এমিরেটস স্কাইকাগোর ফ্লাইট ইকেএ ৯৭৮৮ (EK 9788) পরিচালনা করছিল তুরস্কভিত্তিক কার্গো এয়ারলাইন এয়ার এ সি টি। উড়োজাহাজটি একটি বোয়িং ৭৪৭-৪০০ ফ্রেইটার, যার নিবন্ধন নম্বর টিসি-এসিএফ। এটি মূলত যাত্রীবাহী মডেল থেকে পরবর্তীতে কার্গো রূপে রূপান্তরিত হয়েছিল।

সোমবার ভোর ৩টা ৫০ মিনিটে দুবাইয়ের আল মক্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়াল দেওয়ার পর বিমানটি হংকংয়ের উত্তর রানওয়েতে অবতরণের প্রস্তুতি নেয়। অবতরণের সময় বিমানটি একটি নিরাপত্তা টহল গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। সংঘর্ষের পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উড়োজাহাজটি গাড়িসহ সোজা সাগরে পড়ে যায়।

হংকং সিভিল অ্যাভিয়েশন ডিপার্টমেন্টের (HK CAD) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার সময় ওই গাড়িতে থাকা দুইজন গ্রাউন্ড স্টাফ সাগরে পড়ে যান। দ্রুত উদ্ধারকর্মীরা তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে গেলেও দুজনকেই বাঁচানো যায়নি। বিমানে থাকা চারজন ক্রু সদস্য জীবিত আছেন, তবে তাঁদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

স্থানীয় গণমাধ্যম আরটিএইচকে জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর বিমানবন্দরের উত্তর রানওয়েটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্য দুটি রানওয়ে সচল থাকায় বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অন্তত ১১টি কার্গো ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি ফ্লাইট বিকল্প রানওয়েতে পরিচালিত হচ্ছে।

হংকং সরকারের ফ্লাইং সার্ভিসের হেলিকপ্টার ও ফায়ার সার্ভিস বিভাগের উদ্ধার জাহাজ দুর্ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। সকালে উদ্ধারকাজ শেষ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে হংকং এয়ার অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন অথরিটি।

এমিরেটসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় বিমানটিতে কোনো মালামাল ছিল না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা রানওয়ের পৃষ্ঠতলে যান্ত্রিক সমস্যার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত। ১৯৯৮ সালে চালু হওয়ার পর থেকে সেখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। তাই এই ঘটনাকে একটি “বিরল ও গভীর উদ্বেগজনক” দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছে স্থানীয় প্রশাসন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসা ব্যয়ের পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিমানটির ব্ল্যাক বক্স হংকং সিভিল অ্যাভিয়েশন ডিপার্টমেন্টের হেফাজতে রাখা হবে।

হংকং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার তদন্ত ও উদ্ধার কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলন করা হবে।