বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তিনটি আইকনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন কাস্টমস হাউস, কাস্টমস অ্যাকাডেমি ও কর ভবন। কাস্টমস হাউস নির্মাণকাজ শুরু হলে বিদ্যমান ভবন ভেঙে ফেলতে হবে। এই সময়ের জন্য আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে কাস্টম হাউস স্থানান্তরিত হচ্ছে সাময়িকভাবে। এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে অংশীজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন তিনি। সভায় কাস্টমস কমিশনার শফি উদ্দিন, সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীসহ রাজস্ব প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চেয়ারম্যান জানান, নতুন কাস্টম হাউস হবে অত্যন্ত নান্দনিক ও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন। এর ডিজাইন ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে এবং প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শের জন্য তা উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া কর ভবন নির্মাণ করা হবে আগ্রাবাদ এলাকায় এবং একটি পূর্ণাঙ্গ কাস্টমস অ্যাকাডেমিও স্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, “যেহেতু কাস্টম হাউস করতে হলে পুরনো ভবন ভাঙতে হবে, তাই সাময়িক সময়ের জন্য কাস্টমস অফিসের কার্যক্রম আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগ্রাবাদ এলাকায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী থাকায় এই সিদ্ধান্ত কার্যকর ও ব্যবহারিক হবে বলে আমরা মনে করি।”
সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের জট কমাতে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা প্রায় ছয় হাজার কনটেইনার দ্রুত নিলামের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানানো হয়। এরই মধ্যে ৯০ শতাংশ কনটেইনার ইনভেন্টরি করা হয়েছে, অবশিষ্ট কাজ আগামী চার মাসে শেষ হবে বলে জানান তিনি। বড় পরিসরে একটি নিলাম আয়োজনের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে, যাতে সময়ক্ষেপণ না হয়, সে লক্ষ্যে প্রথম নিলামেই সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ সময় সাংসদদের জন্য আনা কিছু বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে প্রত্যাশিত মূল্য না পাওয়ার বিষয়ও তুলে ধরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “কোনো সরকারি সংস্থা যদি ৬০ শতাংশ মূল্যে নিতে চায়, তা বিবেচনা করা হবে; তবে এগুলো পানির দরে বিক্রির পক্ষপাতী নই।”
কাস্টমসের সার্ভার সমস্যার সমাধানে নতুন একটি প্রযুক্তিনির্ভর অটোমেশন সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনার কথাও জানানো হয় সভায়। তিনি বলেন, “বর্তমানে ব্যবহৃত অ্যাসাইকুডা সিস্টেমের পরিবর্তে উন্নত বিশ্বের মতো একটি স্থায়ী ও নিরবিচ্ছিন্ন ব্যবস্থা তৈরি করা হবে, যাতে আর কোনো ডাউন টাইম না থাকে।”
অফডকের কার্যকারিতা নিয়ে অংশীজনদের মতামত শোনার পর এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, চট্টগ্রাম বন্দর, প্রাইভেট অফডক, অপারেটর, কাস্টমস, সিএন্ডএফ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও চেম্বার প্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথভাবে আলোচনায় বসা হবে। সবার অভিন্ন লক্ষ্য—ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে গতিশীল ও জটিলতামুক্ত করা।
সিটিএ: আরও খবর পেতে চোখ রাখুন businesstoday24.com-এ।