হেলথ ডেস্ক: শীতের আমেজ গায়ে মাখতে কার না ভালো লাগে! কিন্তু এই হাড়কাঁপানো শীতেই অজান্তে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে বড় এক বিপদ। শীতকালে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের জল পিপাসা কমে যায়। আর এই জল কম খাওয়া থেকেই শরীরে দেখা দেয় ডিহাইড্রেশন বা জলশূন্যতা, যা কিডনিতে পাথর বা ‘কিডনি স্টোন’ তৈরির অন্যতম প্রধান কারণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়লে মূত্রের মধ্যে থাকা ক্যালশিয়াম, অক্সালেট এবং ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্ব বেড়ে যায়। পর্যাপ্ত জল না থাকায় এই পদার্থগুলো শরীর থেকে বের হতে পারে না এবং জমাট বেঁধে পাথরে পরিণত হয়। ধীরে ধীরে এই পাথর কিডনি ও মূত্রথলিতে জমতে শুরু করে, যা পরবর্তীতে তীব্র ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তবে ভয়ের কিছু নেই, শীতে কিডনি সুরক্ষিত রাখতে এবং পাথর জমার ঝুঁকি কমাতে বিশেষজ্ঞরা সহজ ৪টি নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।
১. লবণের লাগাম টানুন
কিডনি ভালো রাখতে হলে সবার আগে খাবারের তালিকায় নজর দিতে হবে। অতিরিক্ত সোডিয়াম বা লবণযুক্ত খাবার এবং পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা বহুগুণ বেড়ে যায়। তাই প্রক্রিয়াজাত খাবার ও অতিরিক্ত লবণ পরিহার করাই শ্রেয়।
২. লেবুজাতীয় ফলের গুরুত্ব
শীতের বাজারে কমলা, মাল্টা বা লেবুর অভাব নেই। কিডনিতে পাথর জমা রুখতে প্রতিদিন নিয়ম করে লেবুজাতীয় ফল খাওয়া উচিত। এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ও ভিটামিন সি রক্তে থাকা অতিরিক্ত খনিজ শোষণ করে এবং কিডনিকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
৩. জলের বিকল্প নেই
শীতে পিপাসা না পেলেও নিয়ম করে জল পান করতে হবে। দিনে অন্ততপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল পান করা জরুরি। শুধু সাধারণ জল নয়, এর পাশাপাশি ডিটক্স ওয়াটার, ভেষজ চা (Herbal Tea) বা ডাবের জল পান করলেও শরীর আর্দ্র থাকে এবং কিডনি সচল থাকে।
৪. সচল রাখুন শরীর
শীতের আলসেমিতে অনেকেই শরীরচর্চা বন্ধ করে দেন। কিন্তু কিডনি সুস্থ রাখতে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। স্থূলত্ব বা অতিরিক্ত ওজন কিডনির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। এছাড়া দীর্ঘক্ষণ একভাবে বসে থাকলেও কিডনির ক্ষতি হতে পারে। তাই নিয়মিত হাঁটাচলা ও ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর সচল রাখা জরুরি।
শেষ কথা
শীতের শুষ্কতায় ত্বক যেমন ফেটে যায়, তেমনি শরীরের ভেতরটাও শুকিয়ে যায় যদি আমরা সচেতন না হই। সামান্য একটু সচেতনতা এবং পর্যাপ্ত জলপানই পারে এই শীতে আপনার কিডনিকে পাথর জমার ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখতে।










