বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, নোয়াখালী: নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ২৮ কেজি ওজনের বিরল কোরাল মাছ। শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নামার বাজারে মাছটি নিলামে ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের জেলে মো. রাশেদ শুক্রবার রাতে মেঘনায় জাল ফেলেন। ভোরের দিকে তিনি লক্ষ্য করেন, জালে একটি বিশাল আকৃতির মাছ ধরা পড়েছে। জাল তুলে আনতেই দেখা যায়, এটি একটি বিশাল কোরাল মাছ। মাছটির বিশাল আকৃতিতে রাশেদ ও তার সঙ্গী জেলেরা বিস্মিত হয়ে পড়েন।
মাছটি বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায়। লোকজন ছবি তুলতে ও ভিডিও করার জন্য উৎসুক হয়ে উপস্থিত হন। বাজারের আড়তজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। পরে ইব্রাহিম মৎস্য আড়তে নিলামের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রতি কেজি ১,৫০০ টাকার দরে মোট ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম।
ইব্রাহিম মৎস্য আড়তের ম্যানেজার মো. সোহেল বলেন, “রাশেদ জীবনে প্রথমবার এত বড় কোরাল মাছ ধরতে পেরেছেন। এর ওজন ছিল ২৭ কেজি ৭০০ গ্রাম। আমাদের আড়তে মাঝেমধ্যে ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের কোরাল মাছ আসে, তবে এ বছর এত বড় কোরাল মাছ প্রথমবার ধরা পড়ল।”
ক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, “আমরা খুব কম সময় এত বড় কোরাল মাছ পাই। সচরাচর ছোট কোরাল বাজারে আসে, তবে বড় মাছের চাহিদা সবসময়ই বেশি থাকে। আশা করছি, কোরাল মাছটি ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেঘনা নদীতে মাঝে মাঝে বড় কোরাল মাছ ধরা পড়ে। তবে ২৫ কেজির ওপরে কোরাল মাছ সাধারণত খুব কম ধরা পড়ে। তাই এ ধরনের মাছ জালে উঠলেই বাজারে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।
জেলে মো. রাশেদ বলেন, “এত বড় কোরাল মাছ জীবনে কখনো ধরিনি। আল্লাহর রহমতে জালে এমন মাছ পেয়েছি। বিক্রি করে ভালো দামও পেয়েছি। এতে পরিবারে অনেকটা স্বস্তি এসেছে।”
বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলেও বড় কোরাল মাছ ধরা পড়ার ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রামে ২০২৪ সালে ২২ কেজি ওজনের কোরাল মাছ ধরা পড়ে। বরিশালের ভোলা জেলায় ২০২৩ সালে ২৪ কেজি ওজনের কোরাল মাছ নিলামে বিক্রি হয়। এছাড়া সুন্দরবন অঞ্চলে ২০২২ সালে ২৫ কেজি ওজনের কোরাল মাছ ধরা পড়েছিল, যা স্থানীয় জেলেদের জন্য বিরল ঘটনা হিসেবে ধরা হয়।
এ ধরনের বড় কোরাল মাছ ধরা পড়া শুধু জেলেদের জন্যই নয়, দেশের সামুদ্রিক সম্পদ ও জীববৈচিত্র্যকে তুলে ধরার দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রমাণ করে বাংলাদেশের মৎস্যজীবীরা কতটা দক্ষ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কতটা সচেতন।