Home স্বাস্থ্য মাঝবয়সীদের কোষ্ঠকাঠিন্য ঝুঁকি কমাতে প্রয়োজন জীবনধারায় পরিবর্তন

মাঝবয়সীদের কোষ্ঠকাঠিন্য ঝুঁকি কমাতে প্রয়োজন জীবনধারায় পরিবর্তন

হেলথ ডেস্ক: মাঝবয়সী মানুষেরা যদি নিয়মিত সাত ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ঘুমান, ধূমপান থেকে বিরত থাকেন, সুষম খাদ্য গ্রহণ করেন, নিয়মিত ব্যায়াম করেন এবং অ্যালকোহল গ্রহণ সীমিত করেন—তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘমেয়াদে মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে এবং এটি অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় বলেও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।

হংকং-এর চাইনিজ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই তথ্য তুলে ধরেন। প্রায় ১২ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের ৪০ থেকে ৭০ বছর বয়সী এক লাখ সাত হাজার ৪৭৫ জন অংশগ্রহণকারীকে পর্যবেক্ষণে রেখে এই গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণায় দেখা যায়, যাঁরা অন্তত একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনুসরণ করেন, তাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি প্রায় ২০ শতাংশ কমে যায়। আর যারা চার বা তার বেশি অভ্যাস মেনে চলেন, তাঁদের ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক হ্রাস পায়।

বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়, কখনো ধূমপান না করার অভ্যাসে ঝুঁকি ১৭ শতাংশ কমে এবং নিয়মিত সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানোর ফলে ঝুঁকি ২০ শতাংশের বেশি হ্রাস পায়। গবেষকরা বলছেন, মাঝবয়সী ও প্রবীণদের জন্য এই স্বাস্থ্যকর জীবনধারাগুলো শুধু কোষ্ঠকাঠিন্য নয়, অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

চিকিৎসকরা জানান, কোষ্ঠকাঠিন্য মূলত সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ হলে বা মলত্যাগে অতিরিক্ত কষ্ট হলে তা হিসেবে ধরা হয়। যদিও অনেক ক্ষেত্রে এটি জীবনধারায় পরিবর্তনের মাধ্যমে সেরে যায়, তবে দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য অন্ত্রের ভেতরে ক্ষতিকর উপাদানের দীর্ঘ সময় জমে থাকার কারণে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন। শুধু যুক্তরাজ্যেই প্রতিবছর প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ অন্ত্রের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং প্রায় ১৭ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে জানিয়েছে, অন্ত্রের ক্যান্সারের ৫৪ শতাংশ ক্ষেত্র প্রতিরোধযোগ্য।

কলোরেক্টাল সার্জন হানি ইউসুফ বলেন, “নিয়মিত মলত্যাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি অন্ত্রের দেয়ালের সঙ্গে ক্ষতিকর পদার্থের দীর্ঘ সময়ের সংস্পর্শ কমিয়ে আনে। দীর্ঘসময় এসব উপাদান জমে থাকলে অন্ত্রের আস্তরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

গবেষকরা আরও বলেন, এখনই সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করে জনসাধারণকে এই পাঁচটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণে উৎসাহিত করতে হবে। কারণ নিয়মিত ঘুম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক অনুশীলন কেবল কোষ্ঠকাঠিন্য নয়, অন্যান্য জটিল রোগ প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।