হেলথ ডেস্ক: চল্লিশ পেরোনো অনেক নারীর জীবনেই শুরু হয় নতুন এক অধ্যায়। শরীরে হরমোনের ওঠানামা, রজোনিবৃত্তির কাছাকাছি পৌঁছনো কিংবা সেটি অতিক্রম করা—এসব মিলিয়ে তখন শরীর ও মনের উপর দেখা দেয় নানারকম প্রভাব। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটি সামনে আসে, তা হলো হাড় দুর্বল হয়ে পড়া। অনেকেই অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকিতে পড়েন। তাই এই সময় থেকেই হাড়ের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। আর এ ক্ষেত্রেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি।
কেন ক্যালশিয়াম জরুরি?
ক্যালশিয়াম মূলত হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত রাখতে সাহায্য করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে প্রাকৃতিকভাবে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি হতে থাকে। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে রজোনিবৃত্তির সময় ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায়, যা হাড়ের ক্ষয়কে আরও ত্বরান্বিত করে।
ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট নিয়মিত গ্রহণ করলে:
- হাড় ভাঙার ঝুঁকি কমে
- অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে সহায়তা করে
- দাঁত মজবুত রাখে
- পেশির কার্যকারিতা উন্নত করে
তবে মনে রাখতে হবে, ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট অন্য ওষুধের সঙ্গে একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। অন্তত দু’ঘণ্টার ব্যবধান রাখা জরুরি।
ক্যালশিয়াম পাওয়ার প্রাকৃতিক উপায়
সাপ্লিমেন্ট ছাড়াও খাদ্যতালিকা থেকেই ক্যালশিয়ামের জোগান সম্ভব। যেমন—
- দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
- ছোট মাছ (মাছের কাঁটাসহ)
- শাক-সবজি যেমন পালং শাক, কেল
- বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার
- ভিটামিন ডি: ক্যালশিয়ামের সহচর
শুধু ক্যালশিয়াম খেলেই হবে না, শরীরে সেটি শোষিত হওয়ার জন্য ভিটামিন ডি অপরিহার্য। ভিটামিন ডি না থাকলে ক্যালশিয়াম রক্তে থেকে গেলেও হাড়ে জমতে পারে না।
সূর্যের আলো ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস। প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ মিনিট সকালের রোদে থাকলে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে। কিন্তু শহুরে জীবনে সব সময় তা সম্ভব হয় না। তখন ভরসা করতে হয় খাবার ও সাপ্লিমেন্টের উপর।
ভিটামিন ডি এর আরও কিছু উপকারিতা হলো:
- হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমানো
- ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা
- কিছু ক্ষেত্রে ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস
ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার
- সামুদ্রিক মাছ (স্যালমন, সার্ডিন, টুনা)
- ডিমের কুসুম
- ভিটামিন ডি ফোর্টিফায়েড দুধ ও সিরিয়াল
কবে খাবেন সাপ্লিমেন্ট?
ক্যালশিয়াম: দিনের যে কোনো সময় খাওয়া যায়, তবে একসঙ্গে বেশি পরিমাণে না খেয়ে ভাগ করে খাওয়া উত্তম।
ভিটামিন ডি: সাধারণত সকালের জলখাবার বা দুপুরের খাবারের পর খাওয়াই ভালো।
চল্লিশের পর নারীর হাড়ের যত্ন শুরু হওয়া উচিত আজ থেকেই। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, সূর্যের আলো, এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট—সব মিলেই হাড়কে রাখবে শক্তিশালী।
CTA:
👉 “আপনি কি নিয়মিত ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি নিচ্ছেন? চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে আজই শুরু করুন।”