বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রংপুর: বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক (৪২) মঙ্গলবার ঢাকায় প্রবাসী বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে যান, তার অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালের কাছে রেখে। পরবর্তী তিনদিনের নিখোঁজের পর বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে নীল রঙের দুটি ড্রামের ভেতর থেকে তার ২৬ টুকরা খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

আশরাফুলের স্ত্রী লাকী বেগম ফোন করে স্বামীর খোঁজ নিতে থাকলেও ফোন রিসিভ করতেন তার বন্ধু জরেজ মিয়া। প্রতিবার বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার কথা বলে আশরাফুলের সঙ্গে যোগাযোগ আটকান। শেষ পর্যন্ত, স্বামীর সন্ধান না পেয়ে লাকী বেগম ভাইয়ের সঙ্গে বদরগঞ্জ থানায় গেলে সেখানে জানা যায়, ঢাকায় তার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি, বারবার মূর্ছা যান।
খুন হওয়া আশরাফুলের শ্যালক আব্দুল মজিদ জানান, বুধবার বিকেল ৫টায় আশরাফুলের সঙ্গে লাকী বেগমের শেষ কথা হয়েছিল। এরপর আর যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ফোনে তার বন্ধু জরেজ বারবার কল ধরলেও আশরাফুলকে দেয়নি। পরে জরেজের স্ত্রী জানান, আশরাফুলের ফোন ড্রেনে কুড়ায় পাওয়া গেছে। এরপরই তারা থানায় এসে শোনেন মৃত্যুর খবর।
বদরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, নিহতের স্ত্রী ও স্বজনদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রমনা ও শাহবাগ থানাকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। ঢাকায় এই ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং নিহতের পরিবার সেখানে যাচ্ছেন।
স্থানীয়দের মতে, আশরাফুল সহজ সরল প্রকৃতির একজন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি গ্রামে গরীব-অসহায়দের পাশে থাকতেন এবং সামাজিক ও ধর্মীয় কাজে সক্রিয় ছিলেন। হিলি থেকে কাঁচামাল কিনে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় পাইকারি বিক্রি করতেন তিনি। তার বন্ধু জরেজ মিয়া শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা, দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় ছিলেন এবং দেশে ফেরার পর আশরাফুলের সঙ্গে ঘুরতেন।
নিহতের পরিবার এবং গ্রামের মানুষ এখনও শোকাহত। তারা আশা করছেন, দ্রুত হত্যাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত হবে।










