বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:
শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথেই কার্যত ‘গ্যাস চেম্বারে’ পরিণত হয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। একদিকে রেকর্ড ভাঙা দূষণ, অন্যদিকে ঘন কুয়াশার দাপট—এই দুইয়ের সাঁড়াশি আক্রমণে দিল্লির জনজীবন এখন বিপর্যস্ত। পরিস্থিতি বিচার করে আবহাওয়া দপ্তর (IMD) আগামী রবিবার ও সোমবার রাজধানীতে ‘হলুদ সতর্কতা’ (Yellow Alert) জারি করেছে।
শনিবার ভোর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে গোটা দিল্লি। এদিন সকালে দিল্লির সামগ্রিক বায়ু গুণমান সূচক বা একিউআই (AQI) রেকর্ড করা হয়েছে ৩৩২, যা ‘খুবই খারাপ’ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। তবে দিল্লির বেশ কিছু এলাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। নরেলা (৪১৭), জাহাঙ্গীরপুরী (৪১৭) এবং নেহরুনগরের (৪০২) মতো এলাকাগুলিতে দূষণমাত্রা ৪০০-র গণ্ডি ছাড়িয়ে ‘ভয়াবহ’ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
দূষণ ও ধোঁয়াশার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে চোখ জ্বালা, শ্বাসকষ্ট এবং অনবরত কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও প্রবীণদের ঘরের বাইরে বেরোতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকরা।
দূষণ মোকাবিলায় দিল্লি সরকার ‘ক্লাউড সিডিং’ বা কৃত্রিম বৃষ্টির পথে হাঁটার পরিকল্পনা করেছিল। তবে সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই চেষ্টা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। তথ্য বলছে, তিনটি ব্যর্থ ট্রায়ালের পেছনে সরকারি কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে প্রায় ১.০৭ কোটি টাকা। বিপুল অর্থব্যয় হলেও দূষণ কমাতে তা কোনো কাজে আসেনি। বর্তমানে বাধ্য হয়েই ধুলোবালি নিয়ন্ত্রণে জল স্প্রে করার মতো পুরনো ও প্রথাগত পদ্ধতিতেই ভরসা রাখছে প্রশাসন।
মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর কুয়াশার তীব্রতা আরও বাড়বে। ভোরবেলায় দৃশ্যমানতা শূন্যের কাছাকাছি নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন দেরিতে চলার বা বাতিলের সম্ভাবনা রয়েছে। আইজিআই (IGI) বিমানবন্দরের যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে ফ্লাইটের সময়সূচী যাচাই করে নেন।
আবহাওয়াবিদদের মতে, ৩০ ডিসেম্বর থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। তবে আপাতত গ্র্যাপ এর সর্বোচ্চ স্তরের বিধিনিষেধ জারি থাকলেও দিল্লির আকাশ পরিষ্কার হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। কুয়াশা আর বিষাক্ত ধোঁয়াশার এই মেলবন্ধনে সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত।










