বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল শহরে ‘কিলার গ্যাং’ নামের একটি কথিত সংগঠনের প্যাডে চাঁদা দাবির চিঠি পাওয়ার ঘটনায় বিএনপির তিন নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে ও শনিবার ভোরে টাঙ্গাইল পৌরসভার সন্তোষ এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন শহর বিএনপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি গোলাম রাব্বানী, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মিয়া, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হোসেন, স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সাব্বির মিয়া।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ বলেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পৃথক অভিযান চালিয়ে এ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সামাজিক অস্থিরতা তৈরির অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তবে টাঙ্গাইল শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইজাজুল হক সবুজ দাবি করেছেন, এ ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তার ভাষায়, “বিএনপির নেতাকর্মীদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে।”
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত বৃহস্পতিবার রাতে, যখন সন্তোষ এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মো. আজাহারুল ইসলামের কর্মচারীর হাতে অচেনা এক ব্যক্তি একটি চিঠি দিয়ে যান। পরদিন সকালে চিঠিটি ব্যবসায়ীর হাতে আসে। চিঠিতে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয় এবং বিষয়টি কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
চিঠিতে লেখা ছিল, ‘তুই যদি বিষয়টি নিয়ে আইনের আশ্রয় নিস, তাহলে তোর লাশ পরিবারের কেউ খুঁজে পাবে না।’ আরও লেখা হয়, ‘আগামী ৩ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে নির্দিষ্ট স্থানে টাকা রেখে যেতে হবে।’
ব্যবসায়ী আজাহারুল ইসলাম জানান, তিনি বিষয়টি পুলিশকে মৌখিকভাবে জানানোর পর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর দ্রুত তদন্তে নামে পুলিশ।
এ ঘটনায় সন্তোষ বাজার কমিটির আহ্বায়ক জুবায়ের হোসেন বলেন, “আজাহার ভাই একজন সৎ ব্যবসায়ী। স্বাধীনতার পর এই এলাকায় এমন চিঠির কথা শোনা যায়নি। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।”
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এইচএম মাহবুব রেজওয়ান সিদ্দিকী বলেন, খবর পাওয়ার পর সদর থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তে নেমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যেই গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।