বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া চিকুনগুনিয়ার কারণে নগরবাসী উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্টের মধ্যে নগরীর প্রায় দুই হাজার একশো রোগী শনাক্ত হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জরিপ অনুযায়ী ২০টি এলাকায় রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এই ২০টির মধ্যে হালিশহর, আগ্রাবাদ, বন্দর, সদরঘাট ও ডবলমুরিং এলাকায় রোগীর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হওয়ায় এগুলো অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষিত। আক্রান্ত রোগীর প্রায় ৭০ শতাংশই এই এলাকাগুলোর বাসিন্দা। নাগরিকরা জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহ পার হলেও শরীরের ব্যথা কমছে না, ঘরে ঘরে মশার প্রকোপ বেড়েছে এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম চলমান। হটস্পট এলাকায় মাসব্যাপী নিয়মিত স্প্রে করা হচ্ছে, নতুন মশার ওষুধ ব্যবহার করে অতিরিক্ত নজরদারি করা হচ্ছে।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদে মশার ঘনত্ব সর্বাধিক, যা একশত ৩৪ দশমিক ছয় দুই শতাংশ। এই তথ্য নগরীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, এই হটস্পট ও অতিঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং মশার বৃদ্ধি কমাতে তৎপরতা জোরদার করা হচ্ছে।
নাগরিকদের সতর্কবার্তা, “আমাদের এলাকায় প্রতিদিন নতুন করে মানুষ অসুস্থ হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না হলে পরিবার-পরিজনের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।”
চিকুনগুনিয়া কী?
চিকুনগুনিয়া একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা মশার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। প্রধানত অ্যাডিস মশার কামড়ে রোগ ছড়ায়। রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে হঠাৎ জ্বর, তীব্র মাংসপেশি ও জোড়ার ব্যথা, মাথাব্যথা, চর্মর্যাশ এবং ক্লান্তি দেখা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে চোখে লালচে ভাব, বমি এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যাও হতে পারে।
লক্ষণ এবং সতর্কতা:
- হঠাৎ জ্বর ওঠা
- বিশেষ করে হাত ও পায়ের জোড়ায় ব্যথা
- ত্বকে র্যাশ বা লাল দাগ
- মাথা ও চোখে ব্যথা
- অস্বস্তি, ক্লান্তি এবং বমি বমি ভাব